Sunday, 29 September 2019

"বাংলাদেশের সংবিধানের ধর্ম নিরপেক্ষতা ও ধর্ম ভিত্তিক রাজনৈতিক নিষেধাক্কা'' ?

THE RIGHT THINKING 24


"বাংলাদেশের সংবিধানের ধর্ম নিরপেক্ষতা (উত্তম শব্দ ধর্মীয় স্বাধীনতা, সকলের বা স্ব ধর্মীয় স্বাধীনতা )রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও ধর্ম ভিত্তিক রাজনৈতিক নিষেধাক্কা'' ?

ধর্মনিরপেক্ষতা অক্সফোর্ড শব্দকোষ অনুসারে রাষ্ট্রে সমাজের জন্য কোন আইন বা নিয়ম নীতি প্রনয়ের ক্ষেত্রে ধর্মীয় বিধি বিধানের কোনো প্রভাব থাকবে না অর্থাৎ ধর্মীয় বিধি বিধান কোনো বাঁধা প্রধান বা অন্তরায় হবে না, রাষ্ট্র ধর্মীয় বিধানের বিরুদ্ধে যায় এমন নিয়ম নীতি আইনকানুন তৈরী বা প্রণয়ন করতে পারবে, এবং ধর্ম রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বা কার্যকলাপ থেকে দূরে বা আলাদা থাকবে এবং থাকা উচিত, অবশ্যই থাকতে হবে এমনটা নয়, ''secularism means religion should not be involved in society or state institutions, religion is separated from state institutions'', ''here it is used should instead of must'' অর্থাৎ রাষ্ট্রের ধর্ম নিরপেক্ষতা মানে নাস্তিকতা নয় , একেবারে ধর্ম বিরোধিতা নয় ; সোজা ভাষায় এটা হলো এমন ধর্মের পক্ষেও থাকা যাবে আবার চাইলে বিপক্ষেও থাকা যাবে -এটাই ধর্মীয় স্বাধীনতা রাষ্ট্রীয় ও সমাজ ব্যাবস্থায়, ব্যাক্তিজীবনে ধর্ম চর্চা করতে পারবে স্বাধীনভাবে।   এটাই পশ্চিমা দেশের সেক্যুলারিজম বা ধর্মনিরপেক্ষতা। তবে বাস্তবতা ভিন্ন, সমাজের নাগরিকগণ ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে ধর্মের ব্যাবহার হয়ে থাকে, আমেরিকার , যুক্তরাজ্যের এমপি প্রধানমন্ত্রী ধর্মীয় বই নিয়ে ধর্ম ও সৃষ্টিকর্তার নামে শপথ নেয়। তাঁরা ধর্মনিরপেক্ষতা মূলনীতি রাষ্ট্রের একটি উপাদান ধর্মীয় বিধান লঙ্ঘন বা বিরোধিতা বা অনুপস্থিতিই  শুধু পুরোপুরি মেনে চলছে না, আরেকটি উপাদান ধর্মীয় বিধানের  উপস্থিতি সেটিও মেনে চলছে  সামাজিক বিস্বাস এর জন্য, সামাজিক বিস্বাস ও ধর্মীয় বিস্বাস এক হওয়ায় । তবে আইন প্রণয়ের  ধর্মের শিথিল ব্যাবহার করে মাত্র কারন মানুষ বা সমাজ ধর্ম দ্বারা প্রভাবিত। আর বেশিরভাগ মানুষের প্রতিফলনই গণত্রান্তিকভাবে আইনে প্রতিফলনর চেষ্টা করে। তাই রাষ্ট্র এখনো ধর্ম নিরপেক্ষ হয় নাই শুধু মাত্র ধর্মের শিথিল প্রয়োগ হয় সমাজের মানুষের ধর্ম চর্চার কারণে। সমাজের মেজরিটি যেদিন নাস্তিক হবে তখন কেবল ধর্ম বিরোধী  নীতি বা ধর্মনিরপেক্ষতা প্রযোগ হবে। ইতিহাস থেকে দেখা যায়, সেক্যুলারিজম চালু করা হয়েছিল ধর্মীয় বা ধর্মের নামে অত্যাচার ভয়াবহতা থেকে বাঁচার জন্য , একসময় খ্রিস্টান চার্চ রাষ্ট্র পরিচাললনা করতো ধর্মীয় বিধি বিধানের ,তখন ব্যাপক নির্যাতন চলতো মানুষের ওপর নিয়ম ভঙ্গের জন্য। একসময় ক্যাথলিক প্রটেষ্টান দুই দলের খ্রিষ্টানরা মারামারি করে  শত শত মানুষ আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে ধর্মের নামে। তারপর রাষ্ট্র থেকে ধর্ম ব্যাক্তিগত জীবনে রাখার চর্চা শুরুর চিন্তা থেকে এই সেক্যুলারিজম আবিষ্কার হয় যা মৌলবাদী বা উগ্রবাদী ধর্মীয় সমাজকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সোজা ভাষায় ধর্মের চর্চা কিছুটা কমানোর জন্য, শিথিল বা স্বাভাবিক জীবন যাপনের জন্য এবং তাঁর সুফল পশ্চিমা দেশসমূহ পেয়েছে সেখানে ধর্মের বিধান চর্চার জন্য বা  না পালনের জন্য বা লঙ্গনের জন্য  এখন আর হত্যাকান্ড হয় না।     

অর্থাৎ তারা এটাকে বাঁচার অস্র হিসেবে ব্যাবহার করে যেমন কেউ ধর্মীয় বিধান লঙ্ঘন করলো আগে তাকে হত্যা করা হতো, এখন সে নিরাপত্তা বা পতিরক্ষা পায় সেকুলারিজমের অধীনে যে রাষ্ট্র ধর্ম নিরপেক্ষ তাকে এর জন্য কোনো মাশুল দিতে হবে না , সে কোনো অপরাধ করে নাই যদিও অনৈতিক কাজ করেছে ধর্মীয় বিধান লঙ্ঘন করে কারণ আইন প্রণীত হবে সামাজিক মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করে, ধর্মীয় মূল্যবোধের ভিত্তি করে নয়।  আর এর জন্য তার স্বাভাবিক রাষ্ট্রীয় কাজকর্মে অংশ নিতে অসুবিধা নেই বা রাষ্ট্র কোনো বৈষম্যমূলক আচরণ করে না। 

বাংলাদেশের ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা উচিত না , কিন্তু তার অপপ্রয়োগ করতে দেয়া যাবে না সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদ অনুসারে ।  সংগঠন ধর্ম চর্চা করে, ধর্মের চর্চা করে না বলেও বাতিল করাও যাবে না; অর্থাৎ দেশের জন্য, নাগরিকের জন্য ক্ষতিকর হলে বাতিল করা যাবে যে কেউকেই ধর্মের চর্চাকারী বা বিধর্মী বা নাস্তিক কোনো দল  বা সংগঠনকে সেক্যুলার রাষ্ট্রের অধীনে আইন করে সংবিধানের ৮ (১,২) অনুচ্ছেদ অনুসারে, এতে বলা আছে ''জাতীয়তাবাদ , সমাজতন্ত্র , গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা'' মূলনীতির আলোকে আইন প্রণয়ন ও ব্যাখ্যা প্রদান করতে হবে, সামাজিক বিশ্বাস যদি ধর্মীয় হয় তাহলে ধর্মীয় বিশ্বাসীই সামাজিক বিস্বাস ও মূল্যবোধ ।  তবে  সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদ অনুসারে নীতি নৈতিকতার বিরুদ্ধে হলেও আবার বাতিল করা যাবে, নীতি নৈতিকতার মানদন্ড কি তা পরিষ্কার নয় একেক মানুষের একেক রকম নীতি নৈতিকতা।  যেমন কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল যদি বলে আমাদের ভোট দেন ক্ষমতায় গেলে আমরা শরিয়া আইনে দেশ পরিচালনা করবো। এটা সংবিধানের প্রধান মূলনীতির লঙ্গন । বাংলাদেশে মানুষ চাইলে  শরিয়া আইনে দেশ পরিচালনার ধর্মীয় বিধি বিধান মেনে চলতে পারে , বাধা নেই সংবিধানে সেক্যুলারিজমের সংজ্ঞানুসারে, আবার মানুষ না চাইলে ধর্মীয় বিধি বিধান তা বাতিলও করতে পারবে রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থা থেকে আইন করে, তবে ব্যাক্তিজীবনে ধর্ম চর্চা করতে পারবে স্বাধীনভাবে। মানুষের গনত্রান্তিক ইচ্ছানুসারে আইন প্রণীত হবে, কোনো ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী নয়। আবার  সেক্যুলার রাষ্ট্রে ধর্ম বিরুধী আইন করতে বাধ্য নয়, চাইলে ধর্মের পক্ষেও আইন বা ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী আইন করা যাবে, তবে আইন প্রণয়নে ধর্মীয় বিধান আর সামাজিক মূল্যবোধ দু এর মধ্যে দ্বন্দ হলে  সামাজিক মূল্যবোধ প্রাধান্য  পাবে। আবার কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল যদি বলে আমরা ধর্মীয় বিধি বিধান ধারা উজ্জীবিত হয়ে সকল কর্ম ও রাষ্ট্র পরিচালনা করবো ধর্মের মতো ন্যায় সঙ্গতভাবে , আমাদের ভোট দেন , এটা বাংলাদেশের সংবিধান সম্মত। সংবিধানের মূলনীতি মেনে নিবন্ধন পেতে হবে প্রত্যেক রাজনৈতিক দলকে।

 সংবিধানে অনুচ্ছেদ ২ক : বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম মানে এই নয় যে ক্ষমতায় গিয়ে বাংলাদেশে ইসলামী গতানুগতিক শরিয়া আইন চালু করবো। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম মানে হলো বাংলাদেশের সংখ্যা গরিষ্টের বেশি মানুষ প্রায় ৯০% ইসলাম ধর্মের অনুসারী , তারা তাদের ব্যাক্তিগত জীবনে ইসলাম ধর্ম চর্চা করবে আর রাষ্ট্র তা বাস্তবায়ন করবে, কোনো ধরণের বাধা সৃষ্টি করবে না, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকাই রাষ্ট্রর ইসলাম ধর্ম প্রচার প্রসারে কাজ করা, অর্থ ব্যয় করা, একটি আনুষ্ঠানিক বা অফিসিয়াল দায়িত্ব মাত্র বা এক্ষেত্রে বেশি প্রাধান্য দিবে । অর্থাৎ বাংলাদেশের নাগরিকগন ব্যাক্তিগত জীবনে ইসলাম ধর্ম চর্চার স্বাধীনতা ভোগ করবে। আবার ইসলাম ধর্মের মূলনীতি হলো অন্য কোনো ধর্মের চর্চায় ও এমনকি শত্রুর ধর্ম চর্চায় বাধা দিবে না বরং নিরাপত্তা দিবে, শত্রু বলতে কারাগারে বন্দি অমুসলিমরাও তাঁরা তাদের ধর্ম চর্চা করবে। যেমন সৌদি আরবেও ইহুদি খ্রিস্টানদের তার ধর্ম চর্চায়, পালনে বাধা দেয়া যাবে না , ইসলামের এমনটাই নির্দেশ । আবার সংবিধানুসারে অন্যান্য ধর্ম সমূহ হিন্দু , বৌদ্দ , খ্রিস্টান , ইহুদি , শিখ , আহমদিয়া , জৈন, উপজাতীয় ধর্ম ইত্যাদি সমান সুবিধা ভোগ করবে ও স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন করবে। অনুচ্ছেদ ১৯ (১), ২০ (১), ২৭, ২৮ সকল নাগরিক সমান অর্থাৎ নাস্তিকও সমান অধিকার ও মর্যাদার নাগরিক এবং সে যেকোনো কর্মে অংশ নিতে পারবে এবং তার কর্ম অনুসারে তার পারিশমীক মর্যাদা নির্ধারিত হইবে। যে কেউ যেকোনো ধর্ম গ্রহণ ও ত্যাগ করতে পারবে ও প্রচার করতে পারবে তার ধর্মীয় স্বাধীনতায়। 

 আবার কেউ বা কোনো নিবন্ধিত সংগঠন বা নিবন্ধিত রাজনৈতিক সংগঠন ধর্মের কথা বলে সভা সমাবেশ করতে পারে কারণ স্বাধীন আইনসম্মত যৌক্তিক সভা সমাবেশের, প্রচার প্রচারণার অধিকার সংবিধানে সংরক্ষণ করা আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি কোন ধর্মের যেমন ইসলাম বা খৃস্টান ধর্মের ছাত্ররা সিদ্ধান্ত নেয় তারা সকল খৃস্টান ছাত্র মিলে একটা সংগঠন করবে এবং বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলবো সরকার দেশ রাজনীতি ইত্যাদি, এটা সংবিধান সম্মত সামাজিক মূল্যবোধের অধীনে , এটা তাদের সাংবিধানিক অধিকার , নিষিদ্ধ করার সুযোগ নাই। এটা রাজনৈতিক চর্চা। বিভিন্ন মতের রাজনৌতিক চর্চার মানেই গণতন্ত্র। শুধু ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য কাজ করাই রাজনৈতিক চর্চা না , বিভিন্নভাবে রাজনৈতিক চর্চা হতে পারে।

যেমন সকল মুসলমান বা খ্রিষ্টান ব্যাক্তি দ্বারা গঠিত রাজনৈতিক দল যদি বাংলাদেশের সংবিধান মেনে ক্ষমতায় যেয়ে দেশ পরিচানা করবে সংবিধানের মূলনীতির আলোকে এতে কোনো আইনগত বাধা নেই।

দেশের সংবিধানের মূলনীতি শুধু সংসদ সদস্যদের ভোটে  পরিবর্তন না হয়ে , জনগন ,সংসদ সদস্য ও বিভিন্ন শেণীপেশার মানুষের ঐক্যমতের ভিত্তিতে হওয়া প্রয়োজন। একক বিষয়ে রেফারেন্ডাম বা গণভোট এর মাধ্যমে পরিবর্তন করা উচিত। সাধারণ নির্বাচনের কোনো মেনোফেস্টের মধ্যে ঢুকিয়ে সংবিধানের মূলনীতি ও গুরুত্বপূর্ণ বিধান পরিবর্তন করা উচিত নয়। যেমন ভারতের বর্তমান সংসদ চাইলেই সংখ্যাগরিষ্ঠের দ্বারা সংবিধান পরিবর্তনের মাধ্যমে হিন্দু রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না, তা হবে অসাংবিধানিক। কিন্তু শুধু এই বিষয়ে যদি গণভোট দিয়ে জনগণের রায় পক্ষে পায় তাহলে করতে পারে এবং তা সংবিধানসম্মতও হবে তবে কেনো সংবিধানের গ্রম নরম বা প্রতিষ্ঠা মূলনীতি  করে পরিবর্তন করে নতুন নিয়ম আনছে তাঁর যথাযথ কারণ দশাতে হবে। কারণ সেক্যুলারিজম একটি প্রতিষ্ঠ উপাদান আধুনিক গনত্রান্তিক রাষ্ট্রের যেখানে নানা ধর্মের নানা মতের মানুষজন একত্রে  বাস করে, একটি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য।  যেহেতু ভারত সেক্যুলারিজম দ্বারা সকল ধর্মের মানুষের স্বাধীনতা  সহবস্থান নিচ্ছিত করেছে , তাই এটা বাতিলের তেমন সুযোগ নেই কারণ বাতিলের জন্য কোনো যথার্থ কারণ নেই। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম হলে যেকোনো রাষ্ট্রে সমস্যা নেই কারণ ইসলাম ধর্ম সকল ধর্মের মানুষের স্বাধীন ধর্ম চর্চায় বাধা দেয় না বরং স্বাধীনতা দেয় আর ভারতবর্ষ হাজার হাজার বছরের মূলত মুসলমান শাসনত্রান্তের ভুখন্ড।  তাই মুসলমান সংকৃতি এবং ধর্মের স্বাধীনতা বহাল রেখেই ভারতবর্ষকে এগিয়ে নিতে হবে। আবার সনাতন ধর্ম অনেক পুরোনো তাই এর নিয়মকানুন মানবজাতির সর্বশেষ ধর্মীয় বিধান নিয়মাবলী ইসলামের সাথে কম মিল। ইসলাম চর্চা করলে সকলের জন্য উত্তম। অর্থাৎ ভারতের বর্তমান সংসদ চাইলেই সংখ্যাগরিষ্ঠের দ্বারা সংবিধান পরিবর্তনের মাধ্যমে হিন্দু রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না, তা হবে অসাংবিধানিক এবং গনত্রন্তের নিয়মের সাথে সাঙ্গরসিক। ভারত একটি মুসলমান রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হলেও মুসলমান রাষ্ট্রসমূহে সুসম্পর্ক ও ব্যাবসা বাণিজ্যেও অনেক সুবিধা হবে। 

অন্যদিকে উদাহরণস্বরূপ মুসলমান বা হিন্দু ইত্যাদি ধর্মের ক্ষেত্রে সম্পত্তি ভাগ করার ক্ষেত্রে ধর্মের নিয়ম অনুসারে রাস্ট্র আইন করতে বাধ্য নহে রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম ২ক এই অনুচ্ছেদের  অধীনে কারণ ধর্ম পালনে সম মর্যাদা ও স্বাধীনতা ভোগ করিবে এবং রাষ্ট্র তা নিশ্চিত করিবে কিন্তু আইন প্রণয়ন করিতে হইবে সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ  মূলনীতির অধীনে। এখানে ধর্ম বিধান পালনের স্বাধীনতা প্রদান ও রাষ্ট্রীয় বা সমাজের জন্য আইন প্রণয়ন ভিন্ন বিষয়। অনুচ্ছেদ  ৮ (১,২) অনুসারে রাষ্ট্র চাইলে নাগরিকের ধর্মীয় বিধান বহাল রেখে কিংবা বহাল  না রেখেও আইন প্রণয়ন করতে পারবে সেক্যুলারিজমের অধীনে। কোনো নাগরিক তাঁর  পরিবর্তিত ধর্মীয় বিধান মেনে চলতে চায় ব্যাক্তি জীবনের ধর্ম চর্চায় রাষ্ট্রকে  তা সুযোগ করে দিতে হবে বা বাস্তবায়িত করতে হবে, কেউ বাধা প্রদান করতে পারবে না, অর্থাৎ ধর্মীয় স্বাধীনতা অনুচ্ছেদ ৪১ (১) আইন, জনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতা সাপেক্ষে হবে, ছেলে মেয়ে সমান সম্পত্তি পাবে, মেয়ে তালাক অধিকার, মুতা বিবাহ   ইত্যাদি ধর্মীয় বিধান আইন করে পরিবর্তন বা মডারেট করা যাবে।   যেমন পর্যটনে মদ, জুয়া বৃদ্ধি করে বা বাতিল করে  আইন প্রণয়ের সুযোগ আছে। বাতিল করতে চাইলে তা হবে সামাজিক মূল্যবোধের অধীনে ও ধর্মীয় মূল্যবোধের অধীনে। কেউ  (Riba-interest) সুদ অর্থনীতি বাতিল চাই বলে ২ক অনুসারে আদালতে চ্যালেঞ্জ করতে পারবে না। 

সংবিধানের মূলনীতি রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম বা অন্য কোনো ধর্ম নয় বরং ধর্মনিরপক্ষতা, আর আইন প্রণয়নে ও  ব্যাখ্যা প্রদানে সেক্যুলারিজম প্রাধান্য পাবে, তাই রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম বা এর সমান মর্যাদার আরো অনেক ধর্ম হিন্দু বৌদ্দ ইত্যাদি আইন প্রণয়নে অকার্যকর হবে তবে ব্যাক্তিগত জীবনে ধর্ম পালনের স্বাধীনতা ভোগ করবে।  

আবার যদি শুধু রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকে তাঁর মানে এই নয় যে রাস্ট্র শরিয়া আইনে চালাতে হবে। এটা থাকা মানে রাস্ট্র চাইলে ইসলামী বিধান অনুসারে আইন করতে পারবে আবার অশরিয়া আইন বা সাধারণ আধুনিক আইনও করতে পারবে। রাষ্ট্রধর্ম থাকা মানে রাষ্ট্রটি তাত্বিকভাবে ধর্মনিৰপেক্ষ নয়, কোনো বিশেষ ধর্মের জনগোষ্ঠীকে পরিচিত করে, প্রাধান্য দেয় বা ওইটা বেশিরভাগ জনগোষ্ঠীর ধর্ম ওই রাষ্ট্রে। তবে রাষ্ট্র ধর্ম থাকলে এটাই সুবিধা বিশেষ ধর্মের মূল্যবোধ রাষ্ট্র কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় বিবেচনার চেষ্টা করবে, করতেই হবে বাধ্যবাধকতা নেই । আবার যদি সংবিধানে বলা থাকে রাষ্ট্রীয় সকল কাজে বা আইন প্রণয়নে রাষ্ট্রীয় ধর্ম প্রধান্য পাবে বা বিবেচনায় নিতে হবে তখন ধর্ম অনুযায়ী আইন করতে হবে। যার ফলে রাষ্ট্রধর্ম থাকা বা না থাকা কোনো বিশেষ তাৎপর্য বহন করে না, আইন প্রণয়নে বা রাষ্ট্রীয় কোনো সিদ্বান্তে। এটা শুধু একটা রাষ্টের জনগোষ্ঠীর বা রাষ্টের পরিচয় মাত্র। আবার শুধু ধর্ম নিরেপেক্ষ থাকলেই ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী আইন করা যাবে না , এমনটাও নয়। যেমন সৌদি আরব যদি বলে দেশ ইসলামী শরিয়া আইন অনুযায়ী চলবে আর রাষ্ট্রধর্ম হিন্দু বা খ্রিস্টান এতে তাঁদের হিন্দু ধর্ম অনুযায়ী আইন করতে হবে না, ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী আইন করতে হবে। আইন প্রণীত হবে সংবিধানে কি বলা আছে কিভাবে বা কিসের ভিত্তিতে দেশ চলবে। সৈদি আরবে রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম আবার বাংলাদেশ ,পাকিস্তানেও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম কিন্তু একটি ইসলামী শরিয়া আইনে চলে আর বাকিটা সাধারণ আইনে চলে বা সেক্যুলার আইনে চলে। আবার শুধ রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম, আর ধর্ম নিরপেক্ষ বা সেক্যুলারিজম লেখা নেই তাতেও কোনো সমস্যা নেই , রাষ্ট্রকে শরিয়া আইনে চলতে হবে না সৌদি আরবের মতো   তবে ইসলাম ধর্মের মানুষের ধর্ম চর্চায় স্বাধীনতা বেশি পাবে। 

সেক্যুলারিজম থাকলে শুধু সকল ধর্মীই সমান ও সমান অধিকার, স্বাধীনতা  ভোগ করবে, রাষ্ট্র পরিচালনায় এবং আইন প্রণয়নে ধর্ম প্রাধান্য পাবে না। 
বাংলাদেশ , পাকিস্তান , ভারত , নেপাল ধর্ম নিরেপক্ষ নীতি অনুযায়ী চলে আসছে  ব্রিটিশ ইন্ডিয়া ১৯৪৭ থেকে। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকাই রাষ্ট্রর ইসলাম ধর্ম প্রচার প্রসারে কাজ করা একটি আনুষ্ঠানিক বা অফিসিয়াল দায়িত্ব মাত্র বা এক্ষেত্রে বেশি প্রাধান্য দিবে, আর রাষ্ট্র পরিচালনায় ধর্ম নিরপেক্ষ নীতি মেনে চলতে হবে অর্থাৎ কোনো ধর্মের প্রতি বৈষম্য করা হবে না যেহেতু সংবিধানে বলা আছে পরিচালনার মূলনীতি হল ধর্মনিরপেক্ষ নীতি। অনুচ্ছেদ ২ক দ্বারা হিন্দু , ইসলাম ইত্যাদি ধর্মের কোনো বিধানের বিরুদ্ধে যায় এমন কোনো  আইন হলে তা খুব জোর দিয়ে আটকানো যাবে না, শুধু মাত্র বিবেচনার জন্য অনুরোধ বা আহ্ববান করা যাবে, এমন নয় যে রাষ্ট্র ইসলামী বিধান ১০০% মানতে বাধ্য, ধর্মীয় স্বাধীনতা ৪১ (১) আইন, জনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতা সাপেক্ষে হবে।  

তুলনার ক্ষেত্রে এমন হবে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম  লে ইসলাম ধর্ম চর্চায় কিছুটা  প্রাধান্য পাবে যেমন একটি স্থানে মসজিদ ,গির্জা বা মন্দির নির্মাণে, মসজিদ  প্রাধান্য পাবে (100%), অনুচ্ছেদ ২ক অনুসারে সমান অধিকার ও মর্যাদা (99%) পাবে ধর্ম পালনে যেমন অন্য স্থানে একটি গির্জা বা মন্দির করে দিতে হবে, স্কুলে খাবারের ক্ষেত্রে গরুর মাংস খেতে বাধ্য করতে পারব না, আবার সে যদি খেতে চায় বাধাও দিতে পারবে না ।  আবার অনুচ্ছেদ ১২ দ্বারা ধর্ম নিরপেক্ষতাও সীমিত করা হয়েছে ১০০% খুলে দেওয়া হয় নাই যা খুশি আইন অবাধে ধর্মের ব্যাপক বিরুদ্ধে যেয়ে করা যাবে না।  কিন্তু পুলিশে বা আদালতে ইত্যাদি  নিয়োগের ক্ষেত্রে  ইসলাম ধর্মের  মানুষ প্রাধান্য পাবে না, আইন প্রণয়নেও প্রাধান্য পাবে না । 




Tuesday, 4 June 2019

সমগ্র বিশ্বে কি একই তারিখে ঈদ পালন করা সম্ভব ?


                    সমগ্র বিশ্বে  কি একই তারিখে   ঈদ পালন করা সম্ভব ?

 প্রতি বছর রোজা ঈদ এলেই তার সময় দিনক্ষণ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। সাধারণত দেখা যায় যেদিন সৌদি আরবে রোজা ঈদ হচ্ছে বাংলাদেশে তার পরদিন ঈদ রোজা হয়। আবার দেশের কয়েকটি জায়গায় সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা ঈদ পালন করেন দেশের কিছু সংখ্যক মানুষ। এবিষয়টি নিয়ে দেশের আলেম সমাজের মাঝে অনেক বিতর্ক হলেও কোনো সমাধান এখনও আসেনি। এমনকি ২০১৭ সালে দুই পক্ষের ১৫ জন করে সমান সংখ্যক আলেম বিশেষজ্ঞ নিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বিতর্কের আয়োজন করেও তার কোনো কুল কিনারা করতে পারেনি।

যারা দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন জায়গায় পবিত্র ঈদ উল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে

সুরেশ্বর দরবারের অনুসারী, চাঁদপুর চট্টগ্রামের কিছু জায়গায় সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে অনেক আগে থেকেই কয়েকটি গ্রামের মানুষ রোজা ঈদ করে আসছেন। সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ১৯২৮ সাল থেকে হানাফি মাজহাবের অনুসারীরা বাংলাদেশে ঈদ উদযাপন করে আসছেন এছাড়া সারাদেশের লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, শরীয়তপুর, কুমিল্লা, ভোলা, চট্টগ্রাম, ঝিনাইদহ, বরিশাল, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুর, শেরপুর, পটুয়াখালী মৌলভীবাজারের বিভিন্ন এলাকায় সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করা হচ্ছে

এবিষয়ে সুরেশ্বর দরবারের বর্তমান গদীনশীল পীর সৈয়্যেদ নুরে আখতার হোসাইন আহমদনুরীর বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে এই কথাটি সঠিক নয়, আমরা মনে করি পৃথিবীর যেখানেই চাঁদ দেখা যাবে তার খবরের ভিত্তিতে ঈদ রোজা পালন শুরু হবে। যেহেতু একদিনে বিশ্বব্যাপী জুমআ আদায় করা হয়। সেহেতু একইদিনে ঈদ রোজা পালন সম্ভব। আর এবিষয়ে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশানের (ওআইসি) একটি সিদ্ধান্ত আছে, “যার বাস্তবায়ন আমরা চাই

উল্লেখ, বিশ্বের ৫৭টি মুসলিম দেশ এবং সকল মুসলিমের প্রতিনিধিত্বকারী বিশ্ব মুসলিম সংগঠন , আই, সি-এর ফিকহ একাডেমী ১৯৮৬ সনের ১১-১৬ অক্টোবর জর্ডানের রাজধানী আম্মানে অনুষ্ঠিত শীর্ষ সম্মেলনে শতাধিক শরীয়াহ্ বিশেষজ্ঞের সর্ব সম্মতিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে, “বিশ্বের যে কোনো দেশে চাঁদ উঠলেই স্থানীয় সময় অনুযায়ী একই দিনে রোজা ঈদ পালন করা হবে। কিন্তু ওআইসির সদস্য হলেও সেই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশে কার্যকর হয়নি

এবিষয়ে ওআইসি ফিকহ একাডেমির বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক . সাইয়েদ আব্দুল্লাহ্ আল-মারূফ আরটিভি অনলাইনকে বলেন, বিশ্বব্যাপী একইদিনে ঈদ রোজা করার বিষয়ে আলেম সমাজ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে অনেক তর্ক বিতর্ক হয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে যে বিতর্কের আয়োজন করা হয়েছিল সেখানে উপযুক্ত প্রমাণ দেখানোর পরেও সরকার অজানা কারণে ওআইসির সিদ্ধান্ত মানতে অপারগতা প্রকাশ করে।  তিনি বলেন, হাদিসে এসেছে তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখো চাঁদ দেখে রোজা ছাড়। এখানে কোনো নির্দিষ্ট জায়গার কথা বলা হয়নি। এখন বিজ্ঞানের যুগ। চাঁদ কখন উঠবে তার খবর আগে থেকেই জানা যায়।


অন্যদিকে, ভারতীয় উপমহাদেশের বেশিরভাগ আলেমগণ ওআইসি ফিকহ একাডেমির  এই সিদ্বান্ত পালন করেন না উনারা  ব্যাখ্যা  করেন, যখন যে দেশে চাঁদ উঠবে তখন সে দেশে রোজা ঈদ পালন করা হবে   অধিকাংশ আলেমগণই বলছেন, সহিহ হাদিস দ্বারা একথা প্রমাণ করা যায় না যে, একই দিনে সারাবিশ্ব ঈদ রোজা রাখবে। এসম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখো এবং চাঁদ দেখে ছাড়। তবে যদি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে, তাহলে মাসের হিসাব ৩০ দিনে পূর্ণ করে নাও।(বুখারি, হাদিস : ১৮১০)
 আলেমগণ আরো ব্যাখ্যা  করেন,  তিরমিজি শরিফে পরিস্কার লিখা আছে প্রত্যেক শহরের জন্য ভিন্ন ভিন্ন সময় অনুযায়ী তারা ঈদ পালন করবে।

হাদিসটির বর্ণনায়  বলেন, সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে খলিফাতুল মুসলিম আমির মুয়াবিয়া (রা.) এর কাছে গেলেন মদিনার দূত কুরায়েব। তখন দামেস্কে রমজানের চাঁদ দেখা যায়। জুমআ রাতে সেই চাঁদ দেখা যায়। এরপর মাস শেষে যখন মদিনায় তিনি ফিরলেন, তখন আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.)তার কাছে চাঁদ দেখা সম্পর্কে জানতে চান। তিনি বলেন, আমরা জুমআ রাতে চাঁদ দেখি। তিনি জানতে চান, তুমি নিজে দেখেছ? কুরায়েব বললেন যে না, অন্যরা দেখেছেন এবং মুয়াবিয়াও রোজা রেখেছেন। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বললেন আমরা চাঁদ দেখেছি শনিবার। তোমার কথায় আমরা রোজা ভাঙবো না। আমরা ৩০টি রোজাই রাখবো। কুরায়েব বললেন, মুয়াবিয়া তো খলিফাতুল মুসলিমিন তিনি যেভাবে রোজা রাখলেন সেভাবে কি হবে না? আব্বাস (রা.) বললেন যে না, হবে না। ইবনে আব্বাস (রাঃ) বললেন, না; এটাই আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আদেশ দিয়েছেন যে আমরা আপন দেশের লোকের চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করব; অন্যান্য দূর দেশবাসীদের চাঁদ দেখাকে আমরা যথেষ্ট মান্য করব না।  অর্থাৎ সিরিয়া আর মদিনায় একসাথে রোজা রাখা হচ্ছে না।  

আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (রমযানের) চাঁদ না দেখা পর্যন্ত রোযা রাখবে না এবং (শাওয়ালের) চাঁদ না দেখা পর্যন্ত রোযা রাখা বন্ধ করবে না।-সহীহ মুসলিম /৩৪৭ অন্য হাদীসে আছে, ‘(শাবানের ২৯ দিন পূর্ণ করার পর) তোমরা যদি রমযানের চাঁদ না দেখ তাহলে শাবান মাস ৩০ দিন পূর্ণ করবে।

আয়েশা (রা) বলেন,মুহাম্মাদ (সা) শাবানের মাসের দিন গণনার ক্ষেত্রে অতিশয় সাবধানতা অবলম্বন করতেন এবং তিনি যখনই নতুন চাঁদ দেখতে পেতেন তখন রোযা শুরু করতেন। আর যদি নতুন চাঁদ না দেখতে পেতেন তাহলে শাবান মাসের ত্রিশ দিন পূর্ণ করে রোযা রাখতেন
[
আবু দাউদ, হাদীস নং ২৩১৮]  

উপরোক্ত হাদীস গুলো থেকে আলেমগণ মনে করেন, ভৌগোলিক সীমারেখা আর চাঁদ দেখা এই দুইটি বিধান মেনে রোজা ঈদ পালন করতে হবে  অর্থাৎ সিরিয়া মদিনাই  দুইজন শাসক ছিলেন , তারা যখন তাদের ভূখণ্ডে চাঁদ দেখলো তখন রোজা রাখলো তাদের দেশের মানুষদের  নিয়ে আর যদি একই শাসকের অধীনে সিরিয়া এবং মদিনা পরিচালিত হতো তাহলে একই দিনে এবং তারিখে রোজা রাখা হতো  তার মানে  স্ব  স্ব  অঞ্চলের শাসক ঘোষণা দিবেন তার অঞ্চলের মানুষদের রোজা শুরু করার ওই অঞ্চলে চাঁদ দেখে এবং তার খবর তখন মানুষের কাছে পৌঁছাতে গাঁদা ঘোড়ার বাহনের মাদ্যমে  অর্থাৎ চাঁদ নিজে না দেখেও একজন মুসলিম  রোজা রাখতে পারেন চাদ উঠার  খবর শুনে 

উল্লেখিত হাদীস কারীমা অনুযায়ী রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম কি নিজে চাঁদ দেখে রোযা রেখেছেন, ঈদ করেছেন? না কি অন্যের দেখার সংবাদের মাধ্যমেও রোযা রেখেছেন, ঈদ করেছেন? প্রসংগে মুহাম্মদ (সাঃ)এর নিজের আমল থেকে পবিত্র হাদীসে যে প্রমাণ পাওয়া যায় তা হচ্ছে-
# আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন কিছু সংখ্যক মানুষ (রমযানের) নুতন চাঁদ দেখল। আমি রসূলুল্লাহ (সা)কে সংবাদ দিলাম যে আমিও উক্ত চাঁদ দেখেছি। ফলে রসূলুল্লাহ (সা) নিজে রোযা রাখলেন এবং মানুষকেও রোযা রাখতে নির্দেশ দিলেন। ---- (আবু দাউদ, দারেমী)- মিশকাত, পৃঃ-১৭৪ ,

  # আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: একজন মরুচারী মহানবী (সা)এর নিকট আসলো এবং বললো, আমি প্রথম চাঁদ অর্থাৎ রমযানের চাঁদ দেখেছি। তখন রসূলুল্লাহ (সা) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কিআল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেইএকথা সাক্ষ্য দান কর? সে বলল হ্যাঁ, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, “মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম আল্লাহর রসূলতুমি কি একথা সাক্ষ্য দান কর? সে বলল হ্যাঁ, রসূলুল্লাহ (সা) বললেন, হে বেলাল মানুষের কাছে ঘোষণা করে দাও তারা যেন আগামী দিন রোযা রাখে। ----- (আবু দাউদ পৃঃ-৩২০, তিরমিযী পৃঃ-১৪৮, নাসায়ী-২৩১, ইবনু মাজাহ পৃঃ-১১৯, মিশকাত পৃঃ-১৭৪)

# হযরত আবু উমাইর ইবনু আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত যে রসূলুল্লাহ (সা)এর নিকট একদল আরোহী আসল এবং তারা সাক্ষ্য দিল যে তারা গতকাল (শাওয়ালের) চাঁদ দেখেছে। ফলে রসূলুল্লাহ (সা) মানুষকে রোযা ছাড়ার আদেশ দিলেন। পরের দিন প্রাতঃকালে সকলেই ঈদগাহে সমবেত হলেন। -----(আবু দাউদ, নাসায়ী)- মিশকাত-১২৭

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (রমযানের) চাঁদ না দেখা পর্যন্ত রোযা রাখবে না এবং (শাওয়ালের) চাঁদ না দেখা পর্যন্ত রোযা রাখা বন্ধ করবে না।-সহীহ মুসলিম  অর্থাৎখবর সকলের কাছে পৌঁছানো , চাঁদ উঠা এই দুটো বিসয়ের  উপর রোজা রাখা ছাড়া নির্ভর করছে হাদীস অনুযায়ী বরং ভূখন্ত বা দেশ কোনো বিবেচ্য বিষয়  না  অতএব, যদি আরবের কোথাও চাঁদ দেখা যায়, তাহলে সে সংবাদ ভিন্ন এলাকায় পৌঁছে গেলেচাঁদ দেখা গেছেব্যাপারটি উক্ত এলাকার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। আবার ভিন্ন এলাকাতে চাঁদ দেখা গেলে সে সংবাদ আরবে পৌঁছলে, আরবের জন্যও এটি গ্রহনযোগ্য হবে এভাবে সকল স্থানের ক্ষেত্রে ব্যাপারটি একই  

    আরেকটি হাদীস  যা থেকে  সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, হাদিসটি হলঃ দিন রোযা আরম্ভ হবে যেদিন সকলে রোযা রাখবে, রোযা ভাঙ্গতে হবে দিন যেদিন সবাই রোযা ভাঙ্গে আর কুরবানি করতে হবে দিন যে দিন সকলে কুরবানী করে  [তিরমিযী, হাদীস নং ৬৯৭]

-সহীহ বুখারী /২১২ মাসআলা : কোনো ব্যক্তি একাকী চাঁদ দেখেছে, কিন্তু তার সাক্ষ্য গৃহিত হয়নি, এক্ষেত্রে তার জন্য ব্যক্তিগতভাবে রোযা রাখা জরুরি নয়। এক ব্যক্তি হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রা.-এর নিকট এসে বলল, ‘আমি রযমানের চাঁদ দেখেছি।উমর রা. জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমার সাথে অন্য কেউ কি দেখেছে?’ লোকটি বলল, ‘না, আমি একাই দেখেছি।উমর রা. বললেন, ‘তুমি এখন কী করবে?’ লোকটি বলল, ‘(আমি একা রোযা রাখব না) সবাই যখন রোযা রাখবে আমিও তখন রোযা রাখব।উমর রা. তাকে বাহবা দিয়ে বললেন, ‘তুমি তো বড় ফিকহ প্রজ্ঞার অধিকারী।’-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক /১৬৮;     


অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সকলকে একত্রে , দলবদ্ধ ভাবে  রোজা রাখা ছাড়ার নির্দেশ প্রদান করেছেন উপরোক্ত হাদীস গুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যাচ্ছে , রোজা রাখা ছাড়ার বিধান হচ্ছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তির চাঁদ দেখা , খবর সকলের কাছে পৌঁছে দেয়া এবং দলবদ্ধ ভাবে রোজা পালন করা  অর্থাৎ সকল কাছে পৌঁছা  মানে সকল মুসলিম  বসবাকারী অঞ্চলের মধ্যে যতদূর সম্ভব পৌঁছানো  যায় / কারণ   মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখো এবং চাঁদ দেখে ছাড় তবে যদি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে, তাহলে মাসের হিসাব ৩০ দিনে পূর্ণ করে নাও।(বুখারি, হাদিস : ১৮১০)   থেকে স্পষ্টত ,  এই নির্দেশ কোন অঞ্চলের শাসক তার অধিবাসীদের জন্য নয় বরং সমগ্র মুসলিম বিশের সমগ্র মুসলিমদের  জন্য 

দেশ ব্যাপারটি হলো একটি আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক সীমারেখা,যার উপর ভিত্তি করে একটি এলাকাকে নিজেদের বলে আখ্যায়িত করা হয়। মূলতঃ পৃথিবী আল্লাহর এবং তা সকল মানুষের জন্যে উম্মুক্ত। হযরত মুহাম্মদ(সাঃ) সারা পৃথিবীর সকল মানুষের জন্যে রসূল। তিনি নির্দিষ্ট কোনো গোত্র, সম্প্রদায়ের জন্যে নির্ধারিত নন। আর তাই তাঁর(সাঃ) সকল বক্তব্য পৃথিবীর সকল মানুষের জন্যে সমভাবে প্রযোজ্য। অতএব, চাঁদ দেখা সংক্রান্ত বিষয়টি সারা পৃথিবীর সকল মানুষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কোনো এলাকার লোক চাঁদ দেখতে ব্যর্থ হলে, ভিন্ন এলাকার মানুষের সাক্ষ্য গ্রহন করা হয়েছে এবং এখানে সেই লোকটি কত দূরবর্তী স্থানের লোক তা বিবেচনায় আনা হয়নি। এখানে আরেকটি বাস্তবতা হলো যোগাযোগের মাধ্যম। তৎকালীন সময়ে মানুষের বাহন ছিল ঘোড়া, গাধা, উট, পদযুগল ইত্যাদী।   আজকের দিনের মত যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে রেডিও, টেলিভিশন, ইন্টারনেট, টেলিফোন না থাকাতে তাদের পক্ষে দূরবর্তী অঞ্চলের মানুষের সাথে তাৎক্ষনিক যোগাযোগ রক্ষা করা সম্ভব ছিল না। ফলে, সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা গেলে প্রথমে তা নিজ এলাকার লোকদেরকে জানিয়ে দেওয়া হত, তারপর পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষদেরকে জানানোর জন্যে ঘোড়া সওয়ার পাঠানো হত।  কিন্তু ঘোড়া সওয়ারের পক্ষেও বহুদূর গমন করা সম্ভবপর ছিলনা।

 কিন্তু আমরা এখান থেকে একটি বিষয় বুঝতে পারি, তা হলো-কোনো এলাকায় চাঁদ দেখা গেলে যথাযথ গুরুত্বের সাথে অন্য এলাকার মানুষকে জানানো জরুরী, যাতে করে সকলে একসাথে রোজা ,ঈদ পালন করতে পারে।

এখন ধরা  যাক , ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলমানরা ঈদ রোজা রাখেন এই অঞ্চলের চাঁদ  দেখা নিয়ে সারা পৃথিবীতে একই সময়ে চাঁদ  দেখা যায় না ভোগলিক কারণ আকাশ  মেঘাচ্ছন্ন থাকার করণে   বাংলাদেশ , ভারত, নেপাল  পাকিস্তান আলাদা দেশ  বাংলাদেশে চাদ দেখা গেলো ঈদ ঘোষণা হলো একদিন  কিন্তু ভারতে আকাশ মেঘছন্ন  থাকার কারণে দেখতে পেলো না / তাই ভারত ঈদ  ঘোষণা দিলো  পরেদিন  অথচ ভারত  সরকার টিভি , ইন্টারনেট ইত্যাদি মাধ্যমে  ঠিকই  জানতে পারলো চাঁদ উঠার খবর কিন্তু দুই দেশ হওয়াতে ঈদ ঘোষণা করতে পারতেছে না  আলেমদের হাদীস এর ব্যাখ্যা অনুযায়ী    আবার ভারত এবং বাংলাদেশ এক রাষ্ট্র  হলে এর যেকোনো এক  স্থানে কয়েজন মানুষ চাঁদ দেখলে রোজা রাখা ঈদ করা যাচ্ছে - আলেমদের বর্তমান ব্যাখ্যা অনুযাযী (স্ব স্ব দেশের মানুষের চাঁদ দেখার বাধ্যবাধকতা )

আবার ধরা যাক, ভারত ভেঙে আরো তিনটি দেশ হল কাশ্মীর, হায়দারাবাদ ভারত এখন  হায়দারাবাদ দেশের কয়কজন মানুষ চাঁদ দেখলো তা কাশ্মীর দেশে বা ভারতে চলবে না কারণ তাদের দেশের মানুষ চাঁদ দেখে নাই বা পরদিন দেখলো  তারমানে এই ভারতেই রোজা ঈদ পালিত হবে ভিন্ন দিন যদি আলাদা রাষ্ট্র হয় আর চাদ না  দেখা আলাদাভাবে  আলাদাভাবে। কিন্তু ইসলাম তো কোনো রাষ্টের আলাদা দেশ গঠনের উপর আলাদা নিয়ম -এইভাবে চলে না।  অর্থাৎ ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল, একসাথে দেশ হলে এই ভারতীয় উপমহাদের মুসলিমরা একই দিনে ঈদ রাজা পালন করতে পারবে চট্টগামের কযেকজন মানুষের চাঁদ দেখার দ্বারা, পাকিস্তান , কাশ্মীর ভূখণ্ডে আলাদাভাবে চাঁদ  উঠার দরকার নাই কিন্তু আলাদা দেশ হলে পারবে না - চাদ আলাদা আলাদা  উঠতে হবে  এইটাই হলো বর্তমান আলেমদের ব্যাখ্যা  বাংলাদেশ যদি দুই ভাগ হয় তাহলেও দুইভাগের মানুষকেও আলাদা আলাদা চাঁদ দেখে রোজা রাখতে হবে  অথচ খবর জানা যাচ্ছে সকল ভুখণ্ডে কিন্তু শুধু দেশ আলাদা হলেই এই অঞ্চলে কোনো কারণে একদেশে  চাঁদ দেখা না গেলেই রোজা ঈদ এক সাথে করা যাচ্ছে না

ইসলাম পালনের ধরন পরিবর্তন হবে রাজনৈতিক বা কোনো কারণে দেশ আলাদা আলাদা হওয়ার উপর আমি অন্তত একমত হতে চাচ্ছি  না যদিও আমি কোনো ইসলামিক বিশেষজ্ঞ নই তবে প্রত্যেক মুসলমান ইসলামিক বিতর্কিত বিষয়গুলোতে   নিজস্ব   সুচিন্তিত ব্যাখ্যা মতামত আলেমদের কাছে তুলে ধরতে পারেন , আলেমরাই ইসলামিক মাসালা , বিধিবিধান ব্যাখ্যা দিবেন কুরআন সুন্নার আলোকে  এটাই আবশ্যক। 

আমি মনে করি, ৫৭টি মুসলিম দেশ এবং সকল মুসলিমের প্রতিনিধিত্বকারী বিশ্ব মুসলিম সংগঠন , আই, সি-এর ফিকহ একাডেমী যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে , সমগ্র মুসলিম বিশ্বে সকল মুসলিম একই তারিখে রোজা রাখবে ঈদ পালন  করবে।  এটাই অধিক গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা নিয়ম   স্ব স্ব দেশের চাঁদ দেখা কমিটির মতো আন্তর্জাতিক চাঁদ দেখা কমিটি করা হবে। এবং পৃথিবীর যে কোনো স্থানে রমজান মাসের নতুন চাঁদ দেখা যাবে , এই কমিটির প্রধান ঘোষণা দিবেন সারা বিশের মুসলমানদের একই তারিখে রোজা রাখার ঈদ পালন করার জন্য উপরোক্ত হাদীস গুলো পর্যালোচনা করলে এটাই অধিক  যুক্তিসঙ্গত  বলে মনে হয়।   বর্তমান যুগে যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক উন্নত , এক দেশ থেকে অন্য দেশের খবর মুহূতের মধ্যেই    পাওয়া যায়     আমরা জানি ইসলামের বিধি বিধান বা কুরআন  পরিবর্তন হবে না কিন্তু ইসলামী বিধান পালনের মাসালা বা নিয়ম সুচিন্তিত ইসলামিক আলেমগণ ধারা যুগের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবে পরিচালিত হবে।    কাবা ঘর মক্কা , সেক্ষেত্রে চাইলে মক্কা , মদিনা  শহরের  যেই তারিখে বা দিনে চাঁদ উঠে সারা বিশ্বে তাদের সাথে মিল রেখে রোজা ঈদ পালন করা যেতে পারে যদিও  অনেক মুসলিম দেশ তা করছে।    আমরা সকল দেশ একই তারিখে বা দিনে ঈদ করতে পারি তবে স্ব  স্ব দেশের  ভিন্ন ভিন্ন সময়ে রোজা ছাড়া হবে এবং ঈদ নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।  যেমন বাংলাদেশে ঈদ জামাত সকালে হলে লন্ডনে হবে বাংলাদেশ সময় বিকালে কিন্তু একই তারিখে  হবে। 

এই বিষয়ে : শমসের আলী বলেছেন, একজন চাঁদ দেখলেই সমগ্র মুসলমান এর চাঁদ দেখা হয়ে গেলো।  চাঁদ  দেখার খবরটা শুধু আগে ঘোড়ার বাদ্যমে প্রচার করতো এখন রেডিও টেলিভিশন করবে। 

  সুতরাং আমাদের সম্মানিত প্রাজ্ঞ আলেমগণদের একত্রে বসে ওআইসি ফিকহ একাডেমির এই সিদ্দান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে কুরআন হাদীসরে  উপযুগতটা পালন এবং সমগ্র মুসলিম বিশের ভাতৃত্ব ঐক্যের স্বার্থে।  অতএব  , সমগ্র বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বের সকল মুসলমান একই তারিখে ঈদ পালন করবে আর এতেই মুসলিম উম্মার মান মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে এবং কুরআন হাদীসের পবিত্রতা রক্ষা  পাবে।  

     
(“ভুল ত্রুটি আল্লাহ তাআলার ক্ষমা করুক’’)