Monday, 28 July 2025

মাদ্রাসা শিক্ষায় প্রথম প্রতিষ্ঠান বা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল সাফা পর্বতের পাদদেশে যায়েদ-বিন-আরকামের বাড়িতে যেখানে স্বয়ং মুহাম্মাদ ছিলেন শিক্ষক ও চ্যান্সেলর ?

THE RIGHT THINKING 24

মাদ্রাসা শিক্ষায় প্রথম প্রতিষ্ঠান বা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল সাফা পর্বতের পাদদেশে যায়েদ-বিন-আরকামের বাড়িতে যেখানে স্বয়ং মুহাম্মাদ ছিলেন শিক্ষক ও চ্যান্সেলর ?
 

মাদ্রাসা শব্দটি আরবি শব্দ "দারস" থেকে এসেছে, যার অর্থ "পড়া" বা "শিক্ষাদান" Education। মাদ্রাসা হলো মুসলিম বিশ্বে শিক্ষাদানের একটি স্থান বা প্রতিষ্ঠান, যা ধর্মীয় ও ধর্মনিরপেক্ষ উভয় ধরনের শিক্ষাই প্রদান করে থাকে। মাদ্রাসার ইতিহাস বেশ প্রাচীন এবং এর যাত্রা শুরু হয় ইসলামের প্রাথমিক যুগ থেকেই। 

মাদ্রাসার প্রাথমিক ইতিহাস:
ইসলামের প্রথম মাদ্রাসা: মক্কার সাফা পর্বতের পাদদেশে যায়েদ-বিন-আরকামের বাড়িতে ইসলামের প্রথম মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এখানে স্বয়ং হযরত মুহাম্মদ (সা.) শিক্ষক ছিলেন এবং তাঁর কয়েকজন অনুসারী ছিলেন শিক্ষার্থী। 

মদিনায় মাদ্রাসা: হিজরতের পর মদিনায় মসজিদে নববীর পূর্ব পাশে "আসহাবে সুফফা" নামে আরেকটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। 
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট: একাদশ শতাব্দীতে সেলজুকদের অধীনে উজির নিজাম আল-মুলক ইরান, মেসোপটেমিয়া এবং খোরাসানে সরকারী মাদ্রাসার একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করেন, যা মাদ্রাসার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। 

বাংলার প্রথম মুসলিম শাসক ইখতিয়ার উদ্দীন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খলজী ১২০৪ খ্রিস্টাব্দে বাংলার রাজধানী গৌড়ে একটি মসজিদ ও মাদ্রাসা নির্মাণ করেন। সুলতান গিয়াসুদ্দীন একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন ১২১২ খ্রিষ্টাব্দে। পরবর্তীকালে তার বংশধর সুলতান দ্বিতীয় গিয়াসুদ্দীনও একটি মাদ্রাসা নির্মাণ করেন। মাদ্রাসা দুটির নাম যথাক্রমে লাখনুতী ও গৌড় মাদ্রাসা। হোসেন শাহ ও তার পুত্র নুসরত শাহ গৌড়ে বেশ কয়েকটি মাদ্রাসা নির্মাণ করেন।

আলিয়া মাদ্রাসা: ১৭৮০ সালে ওয়ারেন হেস্টিংস কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন, যা ছিল উপমহাদেশে (ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ) আলিয়া ধারার মাদ্রাসার একটি মডেল। 

মাদ্রাসার প্রকারভেদ:
আলিয়া মাদ্রাসা: কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসার আদলে প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসাগুলো আলিয়া মাদ্রাসা নামে পরিচিত। এই ধারার মাদ্রাসায় আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা ও পাঠ্যসূচীর সমন্বয় করা হয়েছে। মাদ্রাসার প্রাথমিক স্তর মক্তব, নূরানি বা ফোরকানিয়া মাদ্রাসা নামে অভিহিত। ফোরকানিয়া শব্দের মূল ফুরকান যার অর্থ বিশিষ্ট। মিথ্যা থেকে সত্যকে সুস্পষ্টভাবে পৃথক করে বলে পবিত্র কুরআন-এর আরেক নাম আল ফুরকান।

কওমি মাদ্রাসা: কওমি মাদ্রাসাগুলো মূলত ধর্মীয় শিক্ষাকেন্দ্রিক এবং এখানে ধর্মীয় শিক্ষার উপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। ইংরেজ শাসনামলে এদেশে মাদ্রাসা শিক্ষা একটি নতুন মোড় নেয়। মাদ্রাসাগুলির নামে মুগল সরকারের বরাদ্দকৃত লাখেরাজ জমি বাজেয়াপ্ত করে। ফলে ঊনবিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে অনেক মাদ্রাসা বন্ধ হয়ে যায়। বাংলার গভর্নর লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস ১৭৮০ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। এই মাদ্রাসাটির মূল উদ্দেশ্য ছিল সরকারের জন্য কিছুসংখ্যক মুসলিম আইন অফিসার তৈরি করা। তবে সরকারের সমর্থন ও অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত হবার কারণে ঊনবিংশ শতাব্দীতে মাদ্রাসা শিক্ষার বিকাশ গতিরুদ্ধ হয়ে পড়ে।

কলকাতা মাদ্রাসা বাংলায় মাদ্রাসা শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি নতুন ধারা প্রবর্তন করে। এই মাদ্রাসার প্রথম প্রধান মৌলভি বাহরুল উলুম মোল্লা মজদুদ্দীন দরসে নিজামির পাঠক্রম দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সেই আদলে নতুন শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করেন। হেস্টিংস কর্তৃক নির্দেশিত হয়ে তিনি এই পাঠক্রমে ইসলামী আইন ও বিচার ব্যবস্থাকে প্রাধান্য দেন।

বাংলার অধিকাংশ মাদ্রাসা দরসে নিজামির আদলে শিক্ষাদান পরিচালনা করে। এই ব্যবস্থা ১৯৭০ দশক পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। দরসে নিজামি পাঠক্রম অনুযায়ী একজন ছাত্রকে ১৭/১৮ বছর বয়সেই আরবি ও ফার্সি ভাষায় লিখিত নির্বাচিত ৯৯টি গ্রন্থের অন্তত একটি পড়ার ও অনুধাবনের যোগ্যতা অর্জন করতে হতো। ধর্মীয় পাঠ্যক্রম ছাড়া এই পাঠক্রমে অন্তর্ভুক্ত ছিল ইউনানি চিকিৎসা বিদ্যা, কুটির শিল্প ও কারিগরি প্রশিক্ষণ। দরসে নিজামির মোট শিক্ষাকাল ৯ বছর।

মাদ্রাসার গুরুত্ব:
মাদ্রাসাগুলো মুসলিম সমাজে ধর্মীয় ও সামাজিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ও মাদ্রাসায় শিক্ষা দেওয়া হয়। 

মাদ্রাসার আধুনিকায়ন:
বর্তমানে মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড মাদ্রাসা শিক্ষাকে আধুনিকীকরণের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।  ভারতীয় উপমহাদেশে প্রচলিত মাদ্রাসার প্রকরণগুলো হলঃ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা, দাখিল মাদ্রাসা, আলিম মাদ্রাসা, ফাজিল মাদ্রাসা, কামিল মাদ্রাসা, হাফিজিয়া মাদ্রাসা, কওমি মাদ্রাসাদীনিয়া মাদ্রাসা। 

বর্তমানে মাদ্রাসা শিক্ষা বাংলাদেশের জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সহ অন্যান্য সরকারি সংস্থার প্রণীত শর্ত পূরণ করে এমন সকল ধরনের অনুমোদিত মাদ্রাসা সরকারি অনুদান পায়। সরকারি অনুদানপুষ্ট অধিকাংশ মাদ্রাসাতেই এখন বাংলা, ইংরেজি এবং বিজ্ঞান শিক্ষা প্রচলিত আছে। মাদ্রাসা শিক্ষা শেষে অনুমোদিত ডিপ্লোমাপ্রাপ্ত স্নাতকরা উচ্চতর শিক্ষার জন্য কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে ভর্তি হতে পারে। ২০০২ সালে বাংলাদেশে ইবতেদায়ী মাদ্রাসা ছিল ১৪,৯৮৭টি, দাখিল ৬,৪০২টি, আলিম ১,৩৭৬টি, ফাজিল ১,০৫০টি এবং কামিল ১৭২টি। এছাড়া কওমী মাদ্রাসা ছিল প্রায় ৩,০০০টি। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রচলিত মাদ্রাসা শিক্ষাকে বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী ৩ শ্রেণীতে বিন্যস্ত করা যায়: প্রাচীন কাঠামোভিত্তিক দরসে নিজামি, পরিবর্তিত ও পরিবর্ধিত পাঠক্রম-ভিত্তিক দারসে নিজামি, এবং আলিয়া নেসাব। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর মাদ্রাসাসমূহকে কওমী বা বেসরকারি মাদ্রাসা বলা হয় ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি শিক্ষা বোর্ড এসবের কার্যক্রম সমম্বয় করে। ১৯৯৮ পর্যন্ত সারাদেশে ২,০৪৩টি মাদ্রাসা কওমী মাদ্রাসা এই বোর্ডে নিবন্ধিত হয়েছে। 

ভারতের দেওবন্দে ১২৮০ হিজরি সালে প্রতিষ্ঠিত দারুল উলুম মাদ্রাসার আদলে স্থাপিত মাদ্রাসাসমূহে দারসে নিজামি প্রাচীন কাঠামো এখনও অটুট রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের চাঁদা, সদকা, যাকাত ইত্যাদি দ্বারা এসব মাদ্রাসা পরিচালিত হয়। নুরানী বা ফোরকানিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক এবং ইমাম-মুয়াজ্জিনদের অধিকাংশই এসব মাদ্রাসার ছাত্র।

মুসলমানদের ইংরেজি শিক্ষায় আগ্রহী করে তোলার লক্ষ্যে ঔপনিবেশিক শাসকবর্গ ১৮৯০-এর দশকে নতুন ধরনের মাদ্রাসা চালু করে। নিউ স্কীম মাদ্রাসা নামে অভিহিত এসব মাদ্রাসার পাঠক্রমে সকল ইসলামি বিষয়ের সঙ্গে ইংরেজি ভাষাকেও বাধ্যতামূলক করা হয়। জুনিয়র ও সিনিয়র নামে দুধরনের নিউ স্কীম মাদ্রাসা প্রবর্তিত হয়। জুনিয়র মাদ্রাসায় পড়ানো হত পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত আর সিনিয়র মাদ্রাসা ছিল মাধ্যমিক শিক্ষার জন্য। সরকারি চাকুরি পেতে আগ্রহী মুসলমান শিক্ষার্থীরা নিউ স্কীম মাদ্রাসায় পড়তে বিশেষ আগ্রহী ছিল।

বর্তমানে আরবদেশ থেকে শুরু করে ইসলামী স্বর্ণযুগের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে আধুনিক প্রযুক্তিসহ বহু বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে।

[Online collected]

গির্জার ভূমিকা: 
অক্সফোর্ড এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস গির্জা থেকে সরাসরি আসেনি, তবে গির্জা এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। দ্বাদশ শতাব্দীর পূর্বে ইউরোপে, শিক্ষা মূলত গির্জার কর্মকর্তাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। সেই সময়ে, অক্সফোর্ড এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলি ধীরে ধীরে গির্জার বাইরে শিক্ষার একটি কেন্দ্র হিসাবে বিকশিত হতে শুরু করে। এই দুটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গির্জা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক ছিল, কারণ সেই সময়ে গির্জা ছিল শিক্ষার প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং শিক্ষকের প্রধান উৎস। 

অক্সফোর্ড এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় দুটিই মধ্যযুগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং তাদের প্রাথমিক পর্যায়ে গির্জার সাথে গভীর সম্পর্ক ছিল। অনেক পণ্ডিত যারা এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষকতা করতেন, তারা ছিলেন গির্জার সদস্য বা পুরোহিত। এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পাঠ্যক্রম এবং শিক্ষণ পদ্ধতিও ধর্মীয় শিক্ষার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল। ধীরে ধীরে, এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলি ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষার একটি কেন্দ্রে পরিণত হয় এবং তাদের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য অর্জন করে। 

কিছু ঐতিহাসিক তথ্য অনুসারে, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা সম্ভবত ১০৯৬ সালের দিকে, যখন শিক্ষকরা শহরে আসা শুরু করেন। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা ১২০৯ সালের দিকে, যখন অক্সফোর্ডের কিছু পণ্ডিত দাঙ্গার কারণে কেমব্রিজে চলে যান। এই দুটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পেছনে গির্জার প্রভাব থাকলেও, তারা সময়ের সাথে সাথে একটি স্বাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠেছে। 

সুতরাং, যদিও গির্জা অক্সফোর্ড এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাথমিক বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল, তবে এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলি ধর্মের বাইরে একটি আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।

অক্সফোর্ড এবং ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস বেশ প্রাচীন এবং উভয়ই ইংল্যান্ডের প্রাচীনতম এবং বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাদান কার্যক্রম ১০৯৬ সাল থেকে শুরু হয়েছিল বলে মনে করা হয়, যা এটিকে ইংরেজি ভাষাভাষী বিশ্বের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় করে তোলে। অন্যদিকে, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ১২০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, এবং এটিও একটি অন্যতম প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়। এই দুটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পেছনের ইতিহাস বেশ আকর্ষণীয় এবং এদের মধ্যে একটি দীর্ঘ সময়ের প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলে আসছে। 

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা:
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার সঠিক তারিখ জানা যায় না, তবে এর শিক্ষাদান কার্যক্রম ১০৯৬ সাল থেকে শুরু হয়েছিল বলে মনে করা হয়। 

এটি ইংরেজি ভাষাভাষী বিশ্বের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়। 
অক্সফোর্ডের দ্রুত বৃদ্ধি ঘটে যখন দ্বিতীয় হেনরি প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ছাত্রদের ভর্তি হতে নিষেধ করেন, যার ফলে অনেক ছাত্র ও শিক্ষক অক্সফোর্ডে চলে আসেন। 
শিক্ষার্থী এবং শহরের মধ্যে বিবাদের কারণে কিছু শিক্ষক-শিক্ষার্থী কেমব্রিজে চলে যান এবং সেখানে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। 

কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা:
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ১২০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যখন কিছু অক্সফোর্ড শিক্ষক-শিক্ষার্থী অক্সফোর্ডের সাথে বিরোধের কারণে কেমব্রিজে চলে যান।

শিক্ষার্থীদের বসবাসের জন্য একটি সুশৃঙ্খল স্থান প্রদানের জন্য, প্রথম কলেজ, পিটারহাউস, ১২৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে অক্সফোর্ডের সাথে একটি শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে উঠেছে। 

 এই দুটি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের দীর্ঘ ইতিহাস এবং বিখ্যাত প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত। উভয়ই তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে এবং শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে শিক্ষাক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। 

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পেছনে গির্জার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। ১৬৩৬ সালে, নতুন কমনওয়েলথে পাদ্রিদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। মূলত পিউরিটানরা "মরুভূমিতে গির্জা" (Church in the wilderness) নামক স্থানে মন্ত্রীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য এটি প্রতিষ্ঠা করে। যদিও এটি আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ধর্মীয় সংস্থার সাথে যুক্ত ছিল না, এর প্রাথমিক পাঠ্যক্রম পিউরিটানিজমের নীতির উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল। 

১৬৩৬ সালে, নিউ ইংল্যান্ডে প্রায় ১৭,০০০ পিউরিটান আসার পর, "মরুভূমিতে গির্জা" নামে পরিচিত নতুন কমনওয়েলথের জন্য পাদ্রিদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। সেই কারণে হার্ভার্ড প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। জন হার্ভার্ড নামক একজন পিউরিটান ধর্মযাজকের নামে এর নামকরণ করা হয়, যিনি এই কলেজের জন্য তার সম্পত্তি এবং গ্রন্থাগারের একটি অংশ দান করেছিলেন। 

হার্ভার্ড প্রতিষ্ঠার প্রথম দিকে গির্জার তত্ত্বাবধানে থাকলেও, ধীরে ধীরে এটি ধর্মীয় প্রভাব থেকে মুক্ত হতে শুরু করে। প্রথম দুই শতাব্দীতে, কলেজটি প্রথমে কেরানি এবং পরে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত হয়, যা ১৮৬৫ সাল পর্যন্ত চলে, জানিয়েছে ব্রিটানিকা। 

সুতরাং, হার্ভার্ডের প্রাথমিক ভিত্তি ছিল গির্জা এবং মন্ত্রীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এটি একটি বৃহত্তর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে, যেখানে বিভিন্ন মত ও পথের মানুষেরা শিক্ষা গ্রহণ করে। 

অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্য হতে হলে, সকল ছাত্র এবং বেশিরভাগ একাডেমিক কর্মীদের অবশ্যই একটি কলেজ বা হলের সদস্য হতে হবে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊনত্রিশটি কলেজ এবং চারটি স্থায়ী বেসরকারি হল (PPH) রয়েছে, প্রতিটি কলেজই তাদের সদস্যপদ নিয়ন্ত্রণ করে এবং তাদের নিজস্ব অভ্যন্তরীণ কাঠামো এবং কার্যক্রম রয়েছে।  সমস্ত কলেজ সমস্ত কোর্স অফার করে না, তবে তারা সাধারণত বিস্তৃত বিষয়গুলি কভার করে।

৩৯টি কলেজ হল:


‡ এই তিনটির কোনও রাজকীয় সনদ নেই, এবং এগুলি স্বাধীন কলেজের পরিবর্তে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগ।

স্থায়ী বেসরকারি হলগুলি বিভিন্ন খ্রিস্টান সম্প্রদায় দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। একটি কলেজ এবং একটি PPH-এর মধ্যে একটি পার্থক্য হল যে কলেজগুলি কলেজের ফেলোদের দ্বারা পরিচালিত হয় , তবে একটি PPH-এর পরিচালনা, অন্তত আংশিকভাবে, সংশ্লিষ্ট খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সাথে থাকে। চারটি PPH হল:

 ব্ল্যাকফ্রায়ার্স হল
 ক্যাম্পিয়ন হল
 রিজেন্টস পার্ক
 ওয়াইক্লিফ হল .

কেমব্রিজ এবং অক্সফোর্ড কলেজগুলি কলেজিয়েট গথিক স্থাপত্যের জন্য স্থাপত্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে, যা উনিশ শতকের শেষের দিক থেকে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় , কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় , শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় এবং সেন্ট লুইসের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় সহ বেশ কয়েকটি আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবহার করে ।

"পুরাতন" এবং "নতুন" কলেজ
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে 31টি কলেজ রয়েছে,  যা 13 শতক থেকে 20 শতকের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত। 1596 ( সিডনি সাসেক্স কলেজ ) এবং 1800 ( ডাউনিং কলেজ ) এর মধ্যে কোনও কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়নি, যা প্রতিষ্ঠার তারিখ অনুসারে কলেজগুলিকে দুটি গ্রুপে বিভক্ত করার অনুমতি দেয়:

১২৮৪ থেকে ১৫৯৬ সালের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত ১৬টি "পুরাতন" কলেজ, এবং
১৮০০ থেকে ১৯৭৭ সালের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত ১৫টি "নতুন" কলেজ।
প্রাচীনতম কলেজ হল পিটারহাউস , যা ১২৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল  এবং নতুন কলেজ হল রবিনসন , যা ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।  হোমারটন , যা প্রথম আঠারো শতকে একটি ভিন্নমত পোষণকারী একাডেমি (এবং পরে শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ) হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, ২০১০ সালে পূর্ণ কলেজের মর্যাদা লাভ করে।

"নতুন" কলেজগুলির মধ্যে ছয়টি (চার্চিল, ফিটজউইলিয়াম, গির্টন, লুসি ক্যাভেন্ডিশ, মারে এডওয়ার্ডস এবং সেন্ট এডমন্ডস) ক্যাসেল হিলে অবস্থিত এবং তাই কখনও কখনও এগুলিকে "পাহাড়ী কলেজ" হিসাবে উল্লেখ করা হয়। 



Friday, 25 July 2025

lawyer's duties to society ?

THE RIGHT THINKING 24

lawyer's duties to society

A lawyer's duties to society extend beyond representing clients and include upholding the legal system, promoting justice, and contributing to the public good. This involves acting with integrity, maintaining client confidentiality, and participating in efforts to improve the law and the legal profession. 

Key aspects of a lawyer's duty to society:
Upholding the legal system:
Lawyers are officers of the court and must act with honesty and integrity, ensuring the legal process is fair and just. 

Promoting access to justice:
Lawyers should work to ensure that all individuals have access to legal representation and a fair hearing, regardless of their financial or social status. 

Maintaining confidentiality:
Protecting client information is essential for fostering trust and ensuring open communication, which is vital for the administration of justice. 

Contributing to legal reform:
Lawyers should use their knowledge of the law to advocate for positive changes in the legal system and to promote a more just society. 

Avoiding conflicts of interest:
Lawyers must prioritize their client's interests while also upholding their duty to the court and the public good. 

Respecting the legal profession:
Lawyers should maintain the dignity and integrity of the legal profession through ethical conduct and professional development.
 
Being a public citizen:
Lawyers should use their skills and knowledge to contribute to the well-being of their communities and to promote the rule of law. 

In essence, lawyers play a crucial role in society by serving as guardians of the legal system, advocates for justice, and champions of the public good.


Monday, 16 June 2025

মানবজাতির সংবিধান অনুযায়ীও খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা ও ধর্মীয় স্বাধীনতাকে মৌলিক অধিকার ঘোষণা করা হয়।

THE RIGHT THINKING 24

মানবজাতির সংবিধান অনুযায়ীও  খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা ও ধর্মীয় স্বাধীনতাকে মৌলিক অধিকার ঘোষণা করা হয়। 

মৌলিক অধিকার:
অধিকার কত প্রকার ও কী কী?
অধিকার প্রধানত দুই প্রকার। যথা- ১। নৈতিক অধিকার ও ২। আইনগত অধিকার ।
১. নৈতিক অধিকার : নৈতিক অধিকার মানুষের বিবেক এবং সামাজিক নৈতিকতা বা ন্যায়বোধ থেকে আসে । যেমন- দুর্বলের সাহায্য লাভের অধিকার নৈতিক অধিকার। এটি রাষ্ট্র কর্তৃক প্রণয়ন করা হয় না যার ফলে এর কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। তাছাড়া এ অধিকার ভঙ্গকারীকে কোনো শাস্তি দেওয়া হয় না । নৈতিক অধিকার বিভিন্ন সমাজে বিভিন্ন রকম হতে পারে। 

আইনগত অধিকার : যেসব অধিকার রাষ্ট্রের আইন কর্তৃক স্বীকৃত ও অনুমোদিত, সেগুলোকে আইনগত অধিকার বলে। আইনগত অধিকারকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন- ক. সামাজিক খ. রাজনৈতিক ও গ. অর্থনৈতিক অধিকার ।

ক. সামাজিক অধিকার : সমাজে সুখ-শান্তিতে বসবাস করার জন্য আমরা সামাজিক অধিকার ভোগ করি । যেমন- জীবন রক্ষার, স্বাধীনভাবে চলাফেরার ও মত প্রকাশের, পরিবার গঠনের, শিক্ষার, আইনের দৃষ্টিতে সমান সুযোগ লাভের, সম্পত্তি লাভের ও ধর্মচর্চার অধিকার ইত্যাদি ।

খ. রাজনৈতিক অধিকার : নির্বাচনে ভোটাধিকার, নির্বাচিত হওয়া এবং সকল প্রকার অভাব-অভিযোগ আবেদনের মাধ্যমে প্রতিকার পাওয়াকে রাজনৈতিক অধিকার বলে। এসব অধিকার ভোগের বিনিময়ে নাগরিকরা রাষ্ট্র পরিচালনায় পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ পায় ।

গ. অর্থনৈতিক অধিকার: জীবনধারণ করা এবং জীবনকে উন্নত ও এগিয়ে নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপ্রদত্ত অধিকারকে অর্থনৈতিক অধিকার বলে । যেমন- যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করার অধিকার, ন্যায্য মজুরি লাভের অধিকার, অবকাশ লাভের অধিকার, শ্রমিকসংঘ গঠনের অধিকার ।
[Copied from SATT ACADEMY. Visit us at:https://sattacademy.com]

নাগরিকের কর্তব্য:
রাষ্ট্রের নিকট নাগরিকের যেমন অধিকার রয়েছে, অনুরূপ রাষ্ট্রের প্রতিও নাগরিকের কর্তব্য রয়েছে । কর্তব্য পালন ব্যতীত অধিকার ভোগ করা প্রত্যাশিত নয়। বিভিন্ন অধিকার প্রদানের মাধ্যমে রাষ্ট্র নাগরিকদের নিজের প্রতি অনুগত ও দায়িত্বশীল করে তোলে। রাষ্ট্র প্রদত্ত অধিকারের মাধ্যমে নাগরিক জীবন বিকশিত হয় । এর বিনিময়ে রাষ্ট্রের প্রতি অনুগত থাকা, সততার সাথে ভোটাধিকার প্রয়োগ করা, নিয়মিত কর প্রদান করা, আইন মান্য করা এবং রাষ্ট্রপ্রদত্ত অন্যান্য দায়িত্ব পালন নাগরিকদের কর্তব্য ।

জাতিসংঘের উদ্দেশ্য:
বিশ্বশান্তি ও সহযোগিতার মহান লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত জাতিসংঘের উদ্দেশ্যগুলো হলো-

১. শান্তির প্রতি হুমকি ও আক্রমণাত্মক কার্যকলাপ প্রতিরোধ করে বিশ্ব শান্তি, শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; ও

২. সকল মানুষের সমান অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের মধ্যে সম্প্রীতি বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করা;

৩. অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মানবসেবামূলক সমস্যার সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা গড়ে ভোলা:

৪. জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ভাষা ও নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ গড়ে তোলা; এ

৫. আন্তর্জাতিক আইনের সাহায্যে আন্তর্জাতিক বিবাদের মীমাংসা করা।

 অথাৎ জাতিসংঘের উদ্দেশ্য  বিশ্বশান্তি, নিরাপত্তা , ঐক্যবদ্ধতা  ও আর্থ -সামাজিক, সাংস্কৃতিক  উন্নয়ন বাস্তবায়ণ ও প্রচার প্রসার করা এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার আওতায় সাধ্যমতো  সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তাকে ডেকে, প্রার্থনা করে সওয়াব অর্জন করা আর সাধারণভাবে এসবই মানবাধিকার ও আইনের শাসন । বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ীও  খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা ও ধর্মীয় স্বাধীনতাকে মৌলিক অধিকার ঘোষণা করা মাত্রই সব নাগরিকের জন্য এসব মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব ও দায়বদ্ধতা দুটোই রাষ্ট্রের কাঁধে কঠোরভাবে বর্তায়। যেহেতু মৌলিক অধিকার আদালতের মাধ্যমে বলবৎযোগ্য ও আইনের মাধ্যমে দাবি করার সুযোগ রয়েছে। 

 মানবাধিকার ও আইনের শাসনের মধ্যে স্বাধীনতার বিভিন্ন রুপ:
স্বাধীনতা বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। যেমন- ১। ব্যক্তি স্বাধীনতা, ২। সামাজিক স্বাধীনতা, ৩ । রাজনৈতিক স্বাধীনতা, ৪ । অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও ৫। জাতীয় স্বাধীনতা ।

১. ব্যক্তি স্বাধীনতা : ব্যক্তি স্বাধীনতা বলতে এমন স্বাধীনতাকে বোঝায়, যে স্বাধীনতা ভোগ করলে অন্যের কোনো ক্ষতি হয় না । যেমন- ধর্মচর্চা করা ও পারিবারিক গোপনীয়তা রক্ষা করা। এ ধরনের স্বাধীনতা ব্যক্তির একান্ত নিজস্ব বিষয় ।

২. সামাজিক স্বাধীনতা : জীবন রক্ষা, সম্পত্তি ভোগ ও বৈধ পেশা গ্রহণ করা সামাজিক স্বাধীনতার অন্তর্ভুক্ত । এ ধরনের স্বাধীনতা ভোগের মাধ্যমে নাগরিক জীবন বিকশিত হয় । সমাজে বসবাসকারী মানুষের অধিকার রক্ষার জন্যই সামাজিক স্বাধীনতা প্রয়োজন। এই স্বাধীনতা এমনভাবে ভোগ করতে হয় যেন অন্যের অনুরূপ স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ না হয় ।

৩. রাজনৈতিক স্বাধীনতা : ভোটদান, নির্বাচিত হওয়া, বিদেশে অবস্থানকালীন নিরাপত্তা লাভ ইত্যাদি নাগরিকের রাজনৈতিক স্বাধীনতা। এসব স্বাধীনতার মাধ্যমে ব্যক্তি রাষ্ট্রীয় শাসনকাজে অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করে । গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাজনৈতিক স্বাধীনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।

8. অর্থনৈতিক স্বাধীনতা : যোগ্যতা অনুযায়ী পেশা গ্রহণ এবং উপযুক্ত পারিশ্রমিক লাভ করাকে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা বলা হয়। মূলত আর্থিক সুবিধা প্রাপ্তির জন্য নাগরিকরা অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ভোগ করে । এই স্বাধীনতা না থাকলে অন্যান্য স্বাধীনতা ভোগ করা যায় না। সমাজের অন্য শ্রেণির শোষণ থেকে মুক্ত থাকার জন্য অর্থনৈতিক স্বাধীনতা প্রয়োজন ।

৫. জাতীয় স্বাধীনতা : বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র এবং অন্য রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত । বাংলাদেশের এই অবস্থানকে জাতীয় স্বাধীনতা বা রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা বলে । এই স্বাধীনতার ফলে একটি রাষ্ট্র অন্য রাষ্ট্রের কর্তৃত্বমুক্ত থাকে । প্রত্যেক স্বাধীন রাষ্ট্র জাতীয় স্বাধীনতা ভোগ করে ।

ওয়ার্ল্ড জাস্টিস প্রজেক্টের আইনের শাসনের ২০২৪ সালের সূচক অনুযায়ী, বাংলাদেশ ১৪২ দেশের মধ্যে ১২৭তম অবস্থানে রয়েছে।  আধুনিক যুগে অন্যতম জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য কনসেপ্ট হলো ওয়েলফেরার স্টেট বা কল্যাণমূলক রাষ্ট্র। ওয়েলফেয়ার স্টেট এমন একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা, যেখানে সরকার জনগণের মৌলিক জীবনমান নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন ধরনের সামাজিক সেবা ও সুবিধা প্রদান করে।

এই রাষ্ট্রে সরকারের মূল লক্ষ্য হলো জনগণের কল্যাণ এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, যাতে প্রত্যেক নাগরিকের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয় এবং নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত থাকে।

ওয়েলফেয়ার স্টেট হিসেবে পরিচিত দেশগুলো যেমন ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, সুইডেনের মতো দেশ এসব অধিকার কয়েকটিকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, তেমনিভাবে বাংলাদেশের মতো অনেক উন্নয়নশীল দেশও এসব অধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকা, বতসোয়ানা, ইন্দোনেশিয়া, আর্জেন্টিনা ও তানজানিয়ার মতো দেশ এই অধিকারগুলোর বেশির ভাগকেই মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

সংবিধানিক মৌলিক অধিকার
মৌলিক অধিকার বলতে রাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য সংবিধান স্বীকৃত কিছু অধিকারকে বোঝায়, যা ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব বিকাশের জন্য অপরিহার্য এবং যা রাষ্ট্রের আইন দ্বারা সংরক্ষিত। 
মৌলিক অধিকার সাধারণত সংবিধান দ্বারা স্বীকৃত এবং লঙ্ঘিত হলে আদালতের আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ থাকে। এটি ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা, সমতা, ধর্ম, মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা, শিক্ষার অধিকার, সম্পত্তির অধিকার, ইত্যাদি বিভিন্ন দিক অন্তর্ভুক্ত করে। 

সংক্ষেপে, মৌলিক অধিকারগুলো হলো:
আইনের দৃষ্টিতে সমতা:
সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং তাদের প্রতি বৈষম্য করা যাবে না। 

জীবন ও ব্যক্তিস্বাধীনতার অধিকার:
প্রত্যেক নাগরিকের জীবন ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতা রক্ষার অধিকার রয়েছে। 

ধর্মের স্বাধীনতা:
প্রত্যেক নাগরিকের নিজ নিজ ধর্ম পালনের স্বাধীনতা থাকবে। 

বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা:
প্রত্যেক নাগরিকের মত প্রকাশ ও বাকস্বাধীনতা থাকবে। 

সংগঠন ও সমাবেশের স্বাধীনতা:
প্রত্যেক নাগরিকের সংগঠন ও শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশের স্বাধীনতা থাকবে। 

চলাফেরার স্বাধীনতা:
প্রত্যেক নাগরিকের দেশের অভ্যন্তরে অবাধে চলাফেরা ও বসতি স্থাপনের স্বাধীনতা থাকবে। 

শিক্ষার অধিকার:
প্রত্যেক নাগরিকের জন্য শিক্ষা লাভের অধিকার থাকবে। 

সম্পত্তির অধিকার:
প্রত্যেক নাগরিকের সম্পত্তি অর্জন ও রক্ষণাবেক্ষণের অধিকার থাকবে। 

সংবিধানিক প্রতিকারের অধিকার:
কোনো নাগরিকের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হলে, তিনি আদালতের মাধ্যমে প্রতিকার চাইতে পারবেন। 

এগুলো ছাড়াও, আরও কিছু মৌলিক অধিকার রয়েছে যা বিভিন্ন দেশে বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত ও সুরক্ষিত হতে পারে। 
[www.google.com]

আইনের মাধ্যমেই মূলত মৌলিক অধিকারগুলো বিশ্ব সমাজে ও রাষ্ট্রে বাস্তবায়ন করতে হয়। আইন প্রণয়নে মৌলিক যে বিষয়গুলো প্রাধান্য দেওয়া হয় তা মূলত আইনের উৎস:
আইনের উৎপত্তি বিভিন্ন উৎস থেকে হতে পারে । আইনের উৎসগুলো নিম্নে বর্ণিত হলো ।

১. প্রথা : দীর্ঘকাল যাবৎ কোনো নিয়ম সমাজে চলতে থাকলে তাকে প্রথা বলে। রাষ্ট্র সৃষ্টির পূর্বে প্রথার মাধ্যমে মানুষের আচরণ নিয়ন্ত্রণ হতো । রাষ্ট্র সৃষ্টির পর যেসব প্রথা রাষ্ট্র কর্তৃক অনুমোদন লাভ করে সেগুলো আইনে পরিণত হয়। যুক্তরাজ্যের অনেক আইন প্রথার উপর ভিত্তি করে সৃষ্টি হয়েছে।

২. ধর্ম : ধর্মীয় অনুশাসন ও ধর্মগ্রন্থ আইনের অন্যতম উৎস। সকল ধর্মের কিছু অনুশাসন রয়েছে যা ঐ ধর্মের অনুসারীরা মেনে চলে। এসব অনুশাসন সমাজ জীবনকে সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত করতে সহায়তা করে । ফলে এসব ধর্মীয় অনুশাসনের অনেক কিছুই পরবর্তীকালে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি লাভের মাধ্যমে আইনে পরিণত হয় । যেমন- মুসলিম আইন, হিন্দু আইন প্রভৃতি । আমাদের দেশে পারিবারিক ও সম্পত্তি আইনের অনেকগুলো উপরে উল্লেখিত দুটি ধর্ম থেকে এসেছে ।

৩. আইনবিদদের গ্রন্থ : আমরা যখন গল্প, উপন্যাস কিংবা খবরের কাগজ পড়ি, কোনো শব্দের অর্থ বুঝতে সমস্যা হলে অভিধান ও বিশ্বকোষের সাহায্য নিই। ঠিক তেমনি, বিচারকগণ কোনো মামলার বিচারকার্য সম্পাদন করতে গিয়ে আইন সংক্রান্ত কোনো সমস্যায় পড়লে তা সমাধানের জন্য আইন- বিশারদদের বিজ্ঞানসম্মত গ্রন্থের সাহায্য নিয়ে এসব আইন ব্যাখ্যা করেন যা পরবর্তীকালে আইনে পরিণত হয়। যেমন- অধ্যাপক এ ভি ডাইসির ‘দ্যা ল অব দ্যা কনস্টিটিউশন' এবং উইলিয়াম ব্লাকস্টোনের ‘কমেনটরিজ অন দ্যা লজ অব ইংল্যান্ড' ।


৪. বিচারকের রায় : আদালতে উত্থাপিত মামলার বিচার করার জন্য প্রচলিত আইন অস্পষ্ট হলে বিচারকগণ তাদের প্রজ্ঞা ও বিচারবুদ্ধির উপর ভিত্তি করে ঐ আইনের ব্যাখ্যা দেন এবং উক্ত মামলার রায় দেন । পরবর্তীকালে বিচারকগণ সেসব রায় অনুসরণ করে বিচার করেন। এভাবে বিচারকের রায় পরবর্তীকালে আইনে পরিণত হয় । সুতরাং বলা যায়, বিচারকের রায় আইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস ।

৫. ন্যায়বোধ : আদালতে এমন অনেক মামলা উত্থাপিত হয় যা সমাধানের জন্য অনেক সময় কোনো আইন বিদ্যমান থাকে না। সে অবস্থায় বিচারকগণ তাদের ন্যায়বোধ বা বিবেক দ্বারা উক্ত মামলার বিচারকাজ সম্পাদন করেন এবং পরবর্তী সময়ে তা আইনে পরিণত হয় ।

৬. আইনসভা : আধুনিককালে আইনের প্রধান উৎস আইনসভা। জনমতের সাথে সঙ্গতি রেখে বিভিন্ন দেশের আইনসভা নতুন আইন প্রণয়ন করে এবং পুরাতন আইন সংশোধন করে যুগোপযোগী করে তোলে।

আইন প্রণয়নের মাধ্যমেই মূলত এসব গণতান্ত্রিক বৈশিষ্ট্য সমূহ নিশ্চিত করা হয় :
গণতান্ত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে প্রধান হলো জনগণের সার্বভৌমত্ব, যেখানে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সরকার গঠন করে এবং জনগণের মতেই দেশ পরিচালিত হয়। এছাড়াও, গণতন্ত্রে আইনের শাসন, নাগরিকদের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, সকলের জন্য সমান সুযোগ এবং স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক সরকার ব্যবস্থা বিদ্যমান থাকে। 

গণতন্ত্রের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য নিচে উল্লেখ করা হলো:
জনগণের সার্বভৌমত্ব:
গণতন্ত্রে চূড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী জনগণ। জনগণ তাদের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে সরকার গঠন করে এবং তাদের মাধ্যমেই দেশ পরিচালিত হয়। 

আইনের শাসন:
গণতন্ত্রে আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান এবং আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। 
মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা:
গণতন্ত্রে প্রত্যেক নাগরিকের ব্যক্তি স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সমাবেশের স্বাধীনতা, সংগঠনের স্বাধীনতা, এবং ধর্ম পালনের স্বাধীনতা সহ বিভিন্ন মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত থাকে। 

সকলের জন্য সমান সুযোগ:
গণতন্ত্রে সকল নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হয়, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ নির্বিশেষে সবাই সমান মর্যাদা পায়। 

স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক সরকার:
গণতন্ত্রে সরকারের কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়। সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকে এবং জনগণ সরকারের কাজের হিসাব চাইতে পারে। 

নিয়মিত নির্বাচন:
গণতন্ত্রে নিয়মিত নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হতে পারে। 

সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা:
গণতন্ত্রে সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা করা হয় এবং তাদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা হয়। 

বিচার বিভাগের স্বাধীনতা:
গণতন্ত্রে বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করে এবং সরকারের হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত থাকে। 

মত প্রকাশের স্বাধীনতা:
গণতন্ত্রে যে কেউ তার মতামত প্রকাশ করতে পারে এবং সেই মতামতকে সম্মান জানানো হয়। 

গণতন্ত্র একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া এবং এর বৈশিষ্ট্যগুলো একটি সমাজের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 



 

Sunday, 15 June 2025

সঙ্গীত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ইউরোপ আমেরিকার মতো দেশে শত ব্যাস্ততার মধ্যেও প্রায় ৩-৫ মিলিয়ন লোকের সমাগম সম্ভব হয় !

THE RIGHT THINKING 24

 সঙ্গীত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ইউরোপ আমেরিকার মতো দেশে শত ব্যাস্ততার মধ্যেও প্রায় ৩-৫ মিলিয়ন লোকের সমাগম সম্ভব হয় !

 ইসলামি পন্ডিতদের দ্বারা সঙ্গীতের উপর নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও মুসলিম বিশ্বের অনেক স্থানে ভক্তিমূলক/ধর্মীয় সঙ্গীত ধর্মনিরপেক্ষ সঙ্গীত ভালোভাবে বিকশিত জনপ্রিয় হয়েছে। ঐতিহাসিকভাবে, ইসলামি স্বর্ণযুগে ইসলামি শিল্প সঙ্গীতের বিকাশ ঘটেছিল। ধর্মনিরপেক্ষ লোকসঙ্গীত শৈলী মধ্যপ্রাচ্যে আরবি সঙ্গীত, ইরানি সঙ্গীত, তুর্কি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত মিশরীয় সঙ্গীত এবং উত্তর আফ্রিকায় আলজেরীয় মরক্কি সঙ্গীতের মধ্যে পাওয়া যায়। দক্ষিণ এশিয়ায় স্বতন্ত্র সঙ্গীত শৈলী রয়েছে আফগান, পাকিস্তানি, বাংলাদেশি, মালদ্বীপীয় সঙ্গীত।

জাকির নায়েক মনে করেন দুটি ছাড়া বাদ বাকি সব বাদ্যযন্ত্র হারাম, যথা- দাফ (একটি ঐতিহ্যবাহী একপিঠে ঢোল) এবং খঞ্জনী, যার কথা হাদিসেও উল্লেখ করা হয়েছে।

সুন্নি ইসলামের একটি সংখ্যালঘু গোষ্ঠী এবং শিয়াদের অন্য একটি গোষ্ঠীর মতে, অনুষ্ঠান উৎসবগুলোতে মহিলাদের জন্য দাফ বাজিয়ে সঙ্গীতের নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে একটি ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা যেতে পারে৷ এই ব্যতিক্রমটি একটি সুপরিচিত হাদিস থেকে এসেছে যেখানে দুটি ছোট মেয়ে একজন মহিলার কাছে গান গাইছিল এবং আবু বকর এতে বাঁধা দিতে চাইলে ইসলামের পয়গম্বর মুহাম্মদ তাঁদের ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন, এই বলে যে, "ওদের ছেড়ে দাও আবু বকর, কারণ প্রতিটি জাতির একটি ঈদ (অর্থাৎ উৎসব) রয়েছে এবং এই দিনটি হলো আমাদের ঈদ।"

ইসলাম সঙ্গীতের মাঝে সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে চলমান একটি জটিল বিতর্কিত বিষয়। অনেক মুসলিম বিশ্বাস করেন যে কুরআন সুন্নাহমতে সঙ্গীত (বাদ্যযন্ত্র গান গাওয়া) নিষিদ্ধ; তবে অন্যান্য মুসলিমরা এই বিষয়ে একমত নন এবং বিশ্বাস করেন যে সঙ্গীতের কিছু ধরন অনুমোদিত বিতর্ক থাকা সত্ত্বেও, বিভিন্ন সময় ইসলামী বিশ্বের স্থানে সঙ্গীত জনপ্রিয়তা সমৃদ্ধি লাভ করেছে। বিবাচন এড়াতে প্রায়ই প্রাসাদে ব্যক্তিগত বাড়িতে সঙ্গীত পরিবেশন করা হতো।

মুসলিম বিশ্বে অনেকাংশে ভক্তিমূলক/ধর্মীয় সঙ্গীত ধর্মনিরপেক্ষ সঙ্গীত ভালোভাবে বিকশিত জনপ্রিয় হয়। যাইহোক, গান গাওয়া অনুমোদিত, অথবা কিছু যন্ত্র যেমন ঢোল অনুমোদিত, অথবা যতক্ষণ পর্যন্ত না এটি এর শ্রোতাদের প্রলোভনে না নিয়ে যায় ততক্ষণ পর্যন্ত অনুমোদিত। তবে নিজেদের সিদ্ধান্ত বিবেচনায় এটি পরিবর্তন হতে পারে। 

পরিবেশ রক্ষায় গাছপালা, বনাঞ্চল, খাবারে ফলমূল ও গাছপালা লতাপাতা এবং এসবে মানুষের আনন্দউৎসব যেখানে নবীজির প্রশংসাপূর্বক ও অনুমতির সহিত আলী রাঃ ও নবী দাউদের আঃ মতো মধুর সুরের গান বাজনাও  প্রাসঙ্গিক। ''আনন্দোৎসব ''

''মহান আল্লাহ (অন্য একটি বিশেষ প্রসঙ্গে) বলেন, ‘হে রাসুল বলুন, যখন আল্লাহর অনুগ্রহ, রহমত, সম্মান ও করুণা অর্জিত হয়, তখন তারা যেন আনন্দোৎসব করে।’ (সুরা : ইউনুস, আয়াত : ৫৮)''

যাইহোক, আগেই অবশ্য উল্লেখ করেছি আমরা জুরিস্ট বা আইনজীবীগণ বা আইনপ্রণেতারা রাজনীতিবিদসহ স্টেকহোল্ডার সকলেই একমত যে জুরিসপ্রুডেন্স অনুসারে আইন প্রণয়নের কতগুলো প্রচলিত মৌলিক নিয়মনীতি রয়েছে যেমনঃ জনগোষ্ঠীর প্রয়োজন, চাহিদা, চাওয়া, দাবী, অভ্যাস বা সংস্কৃতি, বৈশিষ্ঠ্য, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ধর্মীয় বিশ্বাস চর্চাসমূহ, ইত্যাদি যা জীবনাচারকে প্রাধান্য দিয়েই মূলত সামগ্রিক সকল বিষয় বিবেচনায় নিয়ে চূড়ান্তভাবে যুগোপযোগী বা যুগের চাহিদা মানদণ্ড একটি যৌক্তিক নিরপেক্ষ মানদণ্ড নির্ধারন করে চূড়ান্তভাবে সামাজিক রাষ্ট্রীয় প্রাতিষ্ঠানিক বা সরকারি বিধি বিধান হিসেবে চালু করা অনুমোদন দেওয়া হয় যা মূলত প্রচলিত বা কার্যকর আইন বা বিধি হিসেবে রাষ্ট্রে চলমান থাকে তাঁরাই ধারাবাহিকতায়, সংগীতে সাম্প্রতিক দশকগুলোতে প্রযুক্তিভাবে সামাজিক রাষ্ট্রীয় অন্নান্য উন্নয়নের ফলে ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে বিশেষ করে কুরআন সুন্নাহর ইসলামী প্রাথমিক যুগের ডাব বা ডোল, খঞ্জর বা তবলা সহিত ঈদ সঙ্গীত যা বর্তমানে যুগের সাথে তালমিলিয়ে আজ সাংস্কৃতিক জগতে ব্যাপক প্রসার লাভ করেছে বিস্তৃত হয়েছে যেখানে এটি আজ শুধু আনন্দ বিনোদনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় কারণ এখানে বর্তমানে নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর ডিগ্রি মাস্টার পিএইচডি করে সঙ্গীত বাদ্যযন্ত্র, শিল্পকলা সংস্কৃতি, সাহিত্য বিশেষজ্ঞ তৈরী হচ্ছে, লক্ষ লক্ষ সঙ্গীত স্কুল, কলেজ, প্রতিষ্ঠান দল তৈরী হয়েছে যা একটি প্রচলিত প্রাতিষ্ঠানিক বিশ্ব সামাজিক রাষ্ট্রীয় বৈধ পেশা যেখানে কোটি কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে যেখানে সঙ্গীত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ইউরোপ আমেরিকার মতো দেশে শত ব্যাস্ততার মধ্যেও প্রায় ৩-৫ মিলিয়ন লোকের সমাগম সম্ভব হয়।  যার ফলে পূর্বের কিতাবে ইসলামের বিশেষ করে নবী দাউদ আঃ বা আলী রাঃ সেই গভীর সুরের সঙ্গীত আজ গীত, নাত, খনার বচন, থেকে পল্লীগীতি, লোকসংগীত, মুর্শিদী, ভাটিয়ালি, বাউল থেকে আজ ফোক, দেশাত্মবোধক, ক্লাসিকাল, ব্যান্ড, কনসার্ট, এবং উচ্চ যন্ত্রসংগীত ডিজে কনসার্টে উন্নীত হয়েছে যা সমগ্র বিশ্বেই কম বেশি বিশেষ করে উভয় মুসলিম অমুসলিম-আহলে কিতাব অধ্যষিত অঞ্চলে ব্যাক্তিগতভাবে দলবদ্ধভাবে। এমনি নবীজি মুহাম্মদ সাঃ স্ত্রীদের সাথে মেরাথন দৌড়, তরবারি ঘোড়া দৌড় প্রশিক্ষণ, সাহাবীদের সাথে হাসি কৌতুক মজা করা, আড্ডা দেওয়া, ভ্রমণ বা ভ্রমণের মাধ্যমে ঘটনার তথ্য অনুসন্ধান, ইত্যাদি বর্তমানে টোরিসম বা পর্যটন, খেলাধুলা গেম্স্ , সিনেমা শিল্প, সংস্কৃতি বিনোদন হিসেবে ব্যাপক আর্থিক দামী স্টেডিয়ামে অলিম্পিক্স বিনিয়োকসহ ব্যাপক প্রসার বিস্তার লাভ করেছে যাও একটি বিশ্ব প্রাতিষ্ঠানিক বৈধ পেশা যেখানে কোটি লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। যার ফলে চা কফি শিল্পের মত সাংস্কৃতিক খাতে প্রায় নানাভাবে শতকোটি বিশ্ব জনসংখ্যার কর্মের ব্যবস্থা হয়েছে যা আবার পরোক্ষভাবে ট্যাক্স ভ্যাট, জিডিপি ইত্যাদি বাবদ প্রায় শতভাগ বিশ্ব নাগরিকের জন্য অবদান রাখছে। তবে এসবে যত উন্নতিই হোক, সেই সাথে আধ্যাতিক জীবনাচার ইবাদত চর্চা , শিক্ষা প্রচারারেও ইন্টারনেট মাইক টিভি সহ ব্যাপক উন্নতি অব্যাহত রয়েছে যা সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় ইবাদত বিনোদন সমান্তরালেই চলছে বলা যায় যেখানে আধ্যাতিক জীবনাচার ইবাদত চর্চা , শিক্ষা প্রচারারেও এখন পর্যন্ত বড় নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি অর্থাৎ ইবাদত ছেড়ে এসে মত্ত হয়েছেন এমন সংখ্যা নেই বললেই চলে বরং বিশ্বের বহু শিল্পী জীবনে একসময় গান বাজনা পেশা ছেড়ে ইবাদতে গভীরভাবে মনোনিবেশ করছে। অর্থাৎ ইবাদত থেকে দূরে সরিয়ে সম্পূর্ণরূপে বিপদগামী করে যে গান বাজনা পেশা তা কেৰল ক্ষতিকর বা সম্পূর্ণরূপে হারাম পাপাচার অর্জিত হয় বা চিহ্নিত হয় বা সীমালঙ্গন হয় তবে পেশাগতভাবে ধর্মগুরু হিসেবে তাঁদের কড়া বক্তব্য বা মতামত তাঁদের উদ্দেশ্যের দিক থেকে সঠিক রয়েছে কারণ মদ স্পর্শ করাও হারাম পাপাচার বক্তব্য যা মূলত মানুষকে পাপাচারে উদবুদ্ধ হওয়া বা জড়িয়ে পড়ার উপক্রম থেকে দূরে রাখতে আহ্ববান যা মূলত তাত্তিক আধ্যাতিক প্রচার প্রশিক্ষণ যা শতভাগ কর্মসংস্থান বা বাস্তবতার সাথে সামঞ্জস্যতা বজায় রাখার প্রয়োজন নেই কারণ ধর্মের মূলতত্ত্ব বা পূর্ণ অবস্থানের বিশ্বাস বা আইনের সাথে অনেকে সময় কিছু কিছু ক্ষেত্রে আপোষ করে বা ছাড় দিয়ে সক্ষমতা অনুযায়ী ধীরে ধীরে গোটা মানবজাতির সমাজ ব্যাবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে পেশাগত শতভাগ কর্মসংস্থান বা বাস্তবতার সাথে সামঞ্জস্যতা বজায় রাখার জন্য জুরিসপ্রুডেন্স অনুসারে পলিসি মেকার , জুরিস্ট বা আইনজীবী আইনপ্রণেতা রয়েছে আর পলিসি মেকিং এর সময় অবশ্য ধর্মগুরুদের পরামর্শ ধর্মতত্ত্বসহ সকল বিষয়ই বিবেচনায় নিয়েই যৌক্তিক মানদণ্ড নির্ধারণ করা হয়

 

bn.wikipedia.org

ইসলাম সঙ্গীত - উইকিপিডিয়া

ইসলাম সঙ্গীতের মাঝে সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে চলমান একটি জটিল বিতর্কিত বিষয়।[][][][][] অনেক মুসলিম বিশ্বাস করেন ...